উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন

'ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রায় বাইডেনের রাজনৈতিক হাতিয়ার'

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক আদালতের রায় বাইডেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অভিবাসন নীতি, গাজা যুদ্ধে ইসরাইলকে সমর্থনসহ বেশ কিছু কারণে জনমত জরিপে রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রত্যাশী ট্রাম্পের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে আছেন বাইডেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত, এই রায়ের মধ্য দিয়ে নিরপেক্ষ ভোটারদের সমর্থন হারাতে পারেন ট্রাম্প।

নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান যখন সবার ওপরে, তখনই ফৌজদারি মামলায় ফেঁসে গেলেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। নিউইয়র্ক আদালতের এই রায়ের ফলে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় ভাটা পড়বে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

হফস্ট্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মীনা বোস বলেন, 'আপনি বলতে পারেন এটা ষড়যন্ত্র। কিন্তু সময় নিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। জুরিদের অনেকেই ট্রাম্পের পক্ষের লোক। এটা আমেরিকার বিচার ব্যবস্থার একটি বাস্তব উদাহরণ। আমি মনে করি, সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রচারণা চালানো অনেক সহজ। তবে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়া একজন প্রার্থীর প্রচারণায় অংশ নেয়া মোটেও সহজ হবে না।'

বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এখন প্রশ্ন তুলবেন, আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়া একজন ব্যক্তি কীভাবে দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হতে পারেন। ট্রাম্পের এই রায়ের ফলে ডেমোক্র্যাটরা তাদের প্রচারণার কৌশলে পরিবর্তন আনবেন, এমন অভিমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

মীনা বোস আরও বলেন, 'ট্রাম্পের দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় নতুন উদ্যমে নির্বাচনী প্রচারে নামবেন জো বাইডেন। 'গণতন্ত্র আজ হুমকির মুখে'- এই বাক্য নিয়েই শুরু হতে পারে প্রচারাভিযান। একজন অপরাধী হোয়াইট হাউজ দখল করে বসতে পারেন না। বলা যেতে পারে, চারটি মামলার মাত্র একটির নিষ্পত্তি হয়েছে। আগামী মাসগুলোতে বাকি তিনটি মামলার শুনানি হতে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো উঠে আসবে বাইডেনের প্রচারণায়।'

আগামীতে আরও বেশ কয়েকবার আদালতে দেখা যাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়ায় নিরপেক্ষ ভোটারদের সমর্থন হারানোর সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ যখন আদালতের রায়ের ওপর নির্ভর করছে, তখন তরুণ ভোটারদের মনেও সংশয় সৃষ্টি হতে পারে বলে মন্তব্য করছেন বিশ্লেষকরা।

এর আগে ১২ সদস্যের জুরি ট্রাম্পকে ২০১৬ সালের নির্বাচন বেআইনিভাবে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে তার ব্যবসায়িক রেকর্ড জালিয়াতি করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন। এই প্রক্রিয়ায় একজন পর্ন তারকার মুখ বন্ধ রাখার জন্য ঘুষ দেয়া হয়েছিল।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তার ব্যবসায়িক কোম্পানির রেকর্ড জালিয়াতি করার ৩৪টি অভিযোগ গঠন করা হয় এবং জুরি তাকে ৩৪টি অভিযোগেই দোষী সাব্যস্ত করে।

জুরির রায়ে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) এমন এক বিচারের সমাপ্তি টানা হলো, যেটার কেন্দ্রে ছিল সেক্স এবং আর্থিক বিষয় ধামাচাপা দেয়ার প্রয়াস। এই রায় ট্রাম্পকে কারাগারে যাবার ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। এই রায় ট্রাম্পের জন্য একটি অসাধারণ আইনগত হিসেব-নিকেশের মুখোমুখি করেছে।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর