আজ (বৃহস্পতিবার, ১৬ মে) রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকে গভর্নরের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠক শেষে এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম।
দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য, ভোজ্য তেল এবং ওষুধ সহ বেশ কিছু পণ্য উৎপাদনে যে কাঁচামাল প্রয়োজন হয়, তার ৮০-৯০ শতাংশ আমদানি করা হয়। সেই সঙ্গে পোশাক খাত সহ রপ্তানিমুখী যেসব উৎপাদন রয়েছে সেসব পণ্যের কাঁচামাল অনেক ক্ষেত্রে শতভাগ রপ্তানি করতে হয়। তাই বর্তমানের ডলার সংকট এবং দাম ১১৭-১১৮ টাকা হওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদেরকে।
এছাড়া সুদহার বাজারে ছেড়ে দেয়ায় তা কত বাড়তে পারে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সেই সঙ্গে ব্যাংক খাতের দুর্বল অবস্থা অনেকটা ভাবিয়ে তুলেছেন তাদেরকে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গভর্নরের সঙ্গে বৈঠকে বসেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা।
দুপুর ২টার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আসেন ব্যবসায়ী সংগঠন ডিসিসিআই, এমসিসিআই, সিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস, স্টিল অ্যাসোসিয়েশন, ভেজিটেবল অয়েল অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
শীর্ষ ব্যবসায়ী গ্রুপের মধ্যে সিটি, মেঘনা ও আরএফএলের প্রতিনিধিরা এই আলোচনায় অংশ নেন। বিকেল সাড়ে ৪টায় শেষ হয় বৈঠক। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএর সভাপতিরা।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতি, ব্যাংক খাত, সুদ হার ও ডলার রেট নিয়ে কথা হয়েছে আজকের বৈঠকে। সেখানে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ডলার রেট ১১৭ টাকায় রাখার দাবি জানানো হয়। গভর্নর বলেছেন ডলারের দাম ১১৭ টাকার সর্বোচ্চ ১ টাকা কম বা বেশি করতে পারবে ব্যাংক।’
এছাড়া ব্যাংকের সুদের হার ১৪ শতাংশের বেশি যেন না হয় সে বিষয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে বলে জানান এই ব্যবসায়ী নেতা।
তিনি বলেন, 'সুদের হার সর্বোচ্চ ১ শতাংশ কম বেশি হতে পারে । সেক্ষেত্রে ব্যাংকের ১ শতাংশ সার্ভিস চার্জ বাতিল বা কম করার কথা হয়েছে।'
মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতা কমাতে নীতি সিদ্ধান্ত দীর্ঘ মেয়াদে এবং স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে জানানো হয়েছে। গভর্নর বলেছেন এখন থেকে স্থিতিশীল ও দীর্ঘ মেয়াদে নীতি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।'
বৈঠকে চলমান রিজার্ভ সংকট নিয়েও কথা হয়েছে বলে জানায় বাংলাদেশ পোশাক প্রস্ততকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) দুই সভাপতি।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, ‘আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে গভর্নর আশ্বাস দিয়েছেন।’
আর বিকেএমইএ সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান বলেন, 'আগামী ডিসেম্বরে রিজার্ভ সমস্যা সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন গভর্নর।'