হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরাইলকে সামরিক, অর্থনৈতিকসহ সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। তবে অবরুদ্ধ গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গণহত্যা চালানোয় তেলআবিবের প্রতি কিছুটা নাখোশ হলেও সমর্থন অব্যাহত রেখেছে ওয়াশিংটন।
তবে গেল শনিবার ইসরাইলের ভূ-খণ্ডে ইরান যখন হামলা করে বসে তখন তেলআবিবকে বাঁচাতে ঠিকই পাশে দাঁড়ায় মার্কিন প্রশাসন। ইরানের ছোঁড়া তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে ব্যবহার করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। আর এর জেরে ইরানের ওপর জারি করে নতুন নিষেধাজ্ঞা।
এদিকে ইরানের বিরুদ্ধে কোন প্রতিশোধমূলক হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যোগ দেবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেয় পেন্টাগন। এমনকি ইরানে ইসরাইলের হামলায় তাদের কোন সহযোগিতা ছিল না বলেও দাবি করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু ইরানে তেলআবিবের হামলা নিয়ে কোন ভালো-মন্দ প্রতিক্রিয়াও দেখায়নি যুক্তরাষ্ট্র। এমন দ্বিমুখী আচরণেই মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র- অভিযোগ চীনা বিশ্লেষকদের।
দেশটির নিংজিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লি শাওকিয়াং বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল উভয়ই চায় ইরানকে কোণঠাসা করতে। ইরান ও ইসরাইলের যে কোন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই ইসরাইলের পাশে দাঁড়াবে। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র কোনভাবেই চায় না ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে। এমনকি ইসরাইল-ইরান দ্বন্দ্বও চায় না ওয়াশিংটন।
চীনা এ বিশ্লেষকের মতে, ইসরাইল ও ইরান যদি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে তবে এতে ঘি ঢালবে যুক্তরাষ্ট্র। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে তেলআবিবের হামলার মধ্যদিয়ে দু'দেশের বৈরিতার সূত্রপাত। এ ঘটনায় ওয়াশিংটন নিন্দা না জানিয়ে প্রতিশোধমূলক হামলার কারণে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
একই ঘটনা দেখা যায় গাজা ইস্যুতেও। গাজায় মানবিক সংকট জিইয়ে রাখার পেছনেও হাত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।
মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক গবেষক ডং মানুয়ান বলেন, গাজায় মানবিক সংকট দেখেও ইসরাইলের প্রতি নিন্দা জানায়নি যুক্তরাষ্ট্র। অথচ কোন পশ্চিমা নাগরিক হামলায় নিহত হলে তারা শোক জানাতে ভুল করে না। এতে বোঝা যায় যুক্তরাষ্ট্র দ্বিমুখী নীতিতে চলে। আর ইসরাইলকে যদি যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করে যায় তাহলে চক্রাকারে যুদ্ধ চলতেই থাকবে।
মধ্যপ্রাচ্যের অস্থির এ পরিস্থিতির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ইরান-ইসরাইল দ্বন্দ্বে অনেকটাই মুখে কুলুপ এটে বসে রয়েছে জো বাইডেন প্রশাসন।