আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি

দেশে হাজার কোটি টাকার মশারির বাজার

মশার উৎপাতে দিন-দিন বাড়ছে মশারির চাহিদা। এ মশারির ৮০ শতাংশই আসে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে। আগে মশারি বিক্রি মৌসুমভিত্তিক থাকলেও এখন চলে বছরজুড়ে। অভ্যন্তরীণ লেনদেনের বাইরেও মশারির রপ্তানি বাজার এখন হাজার কোটি টাকার।

মশারি তৈরির জন্য আলাদা সুখ্যাতি রয়েছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের। প্রথমে তাঁতের মশারি তৈরি করলেও পরে নেটে তৈরি মশারির কারখানা গড়ে উঠে এখানে। যোগান দিচ্ছে দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ মশারির।

বংশ পরম্পরার এ ব্যবসা এখনো ধরে রেখেছেন অনেকে। একটা সময় এই এলাকার ঘরে ঘরে মশারি তৈরি হলেও এখন চলে গুটি কয়েক এলাকায়। তবুও হয়েছে অনেকেরই কর্মসংস্থান। আট ঘণ্টা কাজ করে দিনে ৩৫টির বেশি মশারি সেলাই করতে পারেন কারিগররা। কেউ কেউ উপার্জন করছেন ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। মৌসুমে সুঁই সুতার সাথে সখ্যতা যেন আরও বেড়ে যায়।

কারিগররা বলেন, আমরা সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করি। একেক কাপড়ের জন্য একেক দাম পাই।

আল-আমিন গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী মো. কামাল হোসেন বলেন, '৪০ বছর যাবত আমরা এ ব্যবসা করতেছি। এখন আমদানি বেশি কিন্তু বেচাকেনা কম। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে এইটার সিজন। বৃষ্টি হইলে মশা কমে যায় তাই বেচাকেনাটাও কম হয়।'

প্রতিমাসে মশারি রপ্তানি হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। ছবি: এখন টিভি

মশারির সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার ভূলতা গাউছিয়া মার্কেট ও গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট। সেখানে মান ও সাইজভেদে ৩ থেকে ৫ হাতের মশারি বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। মৌসুম আসার আগেই মশা বেড়ে যাওয়ায় তাই ভিড় বেড়েছে এসব মার্কেটে।

ক্রেতারা বলেন, কয়েলে কোন কাজ হয় না তাই মশারি কিনতে আসা। সিটি করপোরেশনের যতটুকু পরিমাণে ওষুধ দেয়া দরকার ছিল, তারা তেমন দেয় না। তাই মশা বাড়লে এটার বিক্রি বেশি হয়।

বিক্রেতারা বলছেন, আগে মশারি বিক্রি মৌসুমভিত্তিক থাকলেও গত কয়েক বছর ধরে চলছে বছরজুড়ে। যেন মশার বংশবিস্তারে বড় হচ্ছে মশারির বাজারও।

ব্যবসায়ীরা বলেন, বছরের প্রতিটা সময় বিক্রি হওয়াতে বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে। সিজনে ৩-৪ লাখ টাকা বিক্রি হয়। আবার গড় সিজনে ৫০ হাজার টাকা দৈনিক বিক্রি হয়।

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন মশারি রপ্তানিও করছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারও বেশি মানুষের। এমন প্রতিষ্ঠানও আছে, যারা মাসে শুধু ভারতেই রপ্তানি করছে প্রায় ১৫ লাখ পিস। তবে গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন কমেছে।

বোনাফাইড মিটিং মিলস লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের সম্পূর্ণ নতুন। তাই পণ্যগুলো ত্রুটিমুক্তভাবে তৈরি করা যাচ্ছে। মাসে প্রায় ৬০ গাড়ির উপরে ভারতে মশারি রপ্তানি করছি।'

তবে মশারি রপ্তানিকারকরা ভারত ছাড়িয়ে নতুন গন্তব্য খুঁজছে আফ্রিকায়।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর