দেশে এখন
0

পুরান ঢাকায় ইফতার-সেহরিতে জমজমাট বেচাকেনা

ঐতিহ্যবাহী ও মুখরোচক খাবারের জন্য বিখ্যাত রাজধানীর পুরান ঢাকার রেস্তোরাঁগুলো। রমজানে নাজিরাবাজারের দোকানগুলো যেন উৎসবস্থল। ইফতারের পাশাপাশি সেহরিতেও খাবারের চাহিদা তুঙ্গে থাকে।

ঘড়ির কাঁটায় তখন কেবল মধ্যরাত পেরিয়েছে। তারাবিহ পড়ে খানিকটা জিরিয়ে নিচ্ছে নগরীর ক্লান্ত মানুষ। অথচ ঘুমন্ত নগরীতে তখনও জেগে পুরান ঢাকার নাজিরাবাজার। একজন দুজন নয়, শতশত মানুষ দেখে যে কারো মনে হতে পারে এ তো কেবলই সন্ধ্যা।

হাঁপিয়ে ওঠা নগরীতে একসঙ্গে সময় কাটাতে সেহরির সময়কে বেছে নেন অনেকে। ফলে পুরান ঢাকার নাজিরাবাজারের প্রতিটি হোটেল যেন রুপ নিয়েছে সেহরি উৎসবে। সেহরিতে মুখরোচক খাবারের খোঁজে কেউ এসেছেন পরিবারের সঙ্গে কেউ বা প্রিয়জনকে সঙ্গী করে।

হোটেলে সেহরি খেতে আসা ক্রেতারা বলেন, ‘সেহরি এবং ঘোরাঘুরি একসঙ্গে হয়ে গেল। তাই পুরান ঢাকায় সেহরি খেতে আসা।’

আরেকজন বলেন, ‘কাবাব, বিরিয়ানি যে যেটা খেতে চায় সেটাই পাওয়া যায়। এজন্য পরিবার নিয়ে আসা।’

পুরান ঢাকার খাবারের মধ্যে বিরিয়ানির নামডাক তো সেই পুরনো। সেই সঙ্গে ধোঁয়া উড়ানো কয়েকপদের কাবাবসহ মুখরোচক খাবার খেতে দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অধিকাংশ মানুষ। তারা জানান, নগরজীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে খানিকটা খোশগল্পে সেহরির জন্যই এখানে জমায়েত হওয়া।

শুধু নাজিরাবাজারই নয়, পুরান ঢাকার অলিগলির খাবারের দোকানে ভিড়ের চিরচেনা দৃশ্য চোখে পড়ে। তবে রমজানে সেহরিতে থাকে নানা আয়োজন, বাড়ে কয়েকগুণ বেচাকেনা। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পুরান ঢাকায় সেহরির আয়োজন করে থাকে এমন দোকান আছে শতাধিক। প্রতিটি দোকানে প্রতিদিন গড়ে লাখ টাকার ব্যবসা হয়। যা মাস শেষে কয়েক কোটি টাকায় দাঁড়ায়। আর আয়ের পাশাপাশি খাবারের স্বাদ ও মান ভালো রাখার চেষ্টায় থাকেন ব্যবসায়ীরা।

হোটেল ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘আমাদের পুরান ঢাকায় বন্ধুবান্ধব, পরিবারসহ সেহরি করার জন্য সবাই একত্রে আসেন। আমরা খাবারের মান ভালো করার জন্য সর্বোচ্চ নজর দিই। কারণ বর্তমানে প্রত্যেকটা মানুষ ভালো খাবার চায়।’

আরেকজন বিক্রেতা বলেন, ‘অন্যান্য দিনের চেয়ে সেহরির সময় বেচাকেনা বেশি হয়। আমরা খাবারের দামও বাড়ায়নি।’

সেহরির সময় শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে ভারী খাবারের পাশাপাশি খানিকটা জুস কিংবা শরবত খেতেও ভোলেন না অনেকে। আর গরম ধোঁয়া উঠা চায়ে চুমুক দিতে দিতে খোশগল্পে কাটে নগরবাসীর সেহরি উৎসব।

ইএ