দুই বছর পেরিয়ে তৃতীয় বছরে পা রাখতে যাচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। তবুও দেশ থেকে পুতিন বাহিনীকে হঠাতে পারেনি জেলেনস্কির যোদ্ধারা। একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলে নিচ্ছে রুশ সেনারা। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্সে বেশ কয়েকটি সংকট ও হতাশাজনক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেছেন দোনেৎস্ক অঞ্চলে যুদ্ধরত ড্রোন ও আর্টিলারি ইউনিটের ২০ জনের বেশি ইউক্রেনীয় সেনা ও কমান্ডার।
ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের কথায় সর্বপ্রথম যে বিষয়টি উঠে এসেছে তা হলো- পশ্চিমা বন্ধুরাষ্ট্রগুলো থেকে আসা যুদ্ধ সহায়তার গতি মন্থর হয়ে পড়া। যার কারণে শত্রু পক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করা তাদের পক্ষে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে বলে দাবি করা হয়। এমনকি কিয়েভের অস্ত্র ও গোলাবারুদের ভাণ্ডার প্রায় খালি হয়ে আসায় রুশ সেনারা এর সুবিধা নিয়ে হামলার মাত্রা বাড়াচ্ছে বলেও জানানো হয়। বিপরীতে পাল্টা আক্রমণে পুরনো অস্ত্র ব্যবহার করায় কার্যকর ফলাফল আসছে না।
ইউক্রেন সেনারা বলেন, ‘সোভিয়েত আমলের ডিজাইন করা একাধিক রকেট লঞ্চার রয়েছে। যা যা পশ্চিমা দেশগুলোতে খুব কমই পাওয়া যায়। এখন এসব অস্ত্র সর্বোচ্চ ক্ষমতার প্রায় ৩০ শতাংশ কাজ করতে সক্ষম।’
এখানেই শেষ নয় অসময়ে উষ্ণ আবহাওয়া ইউক্রেনের পূর্বে থাকা হিমায়িত মাটিকে ঘন কাদায় পরিণত করছে। এতে শেষ সম্বল নিয়ে রুশ বাহিনীকে মোকাবিলা করা যেমন কঠিন হয়ে পড়ছে, তেমন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন ইউক্রেনীয় সেনারা। তার ওপর যোদ্ধা সংকট তো আছেই। অথচ যুদ্ধের জন্য সাড়ে ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ ইউক্রেনীয়কে এক করার লক্ষ্যে আইন পাশ হওয়ার জন্য পার্লামেন্টে ঝুলছে।
এক সেনা বলেন, জনবল সংকট আমাদের একটি বড় সমস্যা। যুদ্ধে যোগ দেয়ার জন্য আক্রমণের শুরুতে সাধারণ মানুষের যে আগ্রহ ছিলো সেই উৎসাহ এখন হারিয়ে ফেলছে। আমাদের অনেক জনশক্তি প্রয়োজন। অনেক যোদ্ধা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। বৈরি আবহাওয়ায় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
এ অবস্থায় ড্রোন উৎপাদন এবং উদ্ভাবনে গুরুত্ব দিচ্ছে কিয়েভ। তবে একইসময় মস্কোও তাদের অস্ত্র উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। যা ইউক্রেনের নেয়া উদ্যোগের তুলনায় অনেক বেশি।
এদিকে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি শক্তিশালী যুদ্ধ সরঞ্জাম পেতে জোর দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের নতুন সেনাপ্রধান। তবে মিত্রদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতির সামরিক সহায়তা না পেলে যুদ্ধ পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।