সমঝোতাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার দক্ষতাই রাজনীতি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এ উক্তির প্রতিফলন ছিল ম্যারাথন বার্ষিক ভাষণের প্রায় পুরোটা জুড়ে।
জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বৃহস্পতিবার রুশ রাষ্ট্রপ্রধান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারের মধ্যস্থতায় যেকোনো সময় ইউক্রেনে যুদ্ধ ইস্যুতে আলোচনায় বসতে তিনি প্রস্তুত।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা হলে আমি কী বলতে পারি? প্রথমত, আমি জানিই না যে আমাদের কবে দেখা হবে। কারণ এ বিষয়ে তিনি কিছু বলেন না। চার বছরের বেশি সময় তার সাথে আমার কথা হয়নি। তবে যেকোনো সময় তার সাথে কথা বলতে, বৈঠক করতে আমি প্রস্তুত।’
পুতিনের দাবি, যুদ্ধে রাশিয়ার জয় আসন্ন। তবে কবে নাগাদ, সে উত্তর দেননি তিনি। বলেন, বিনা শর্তে ইউক্রেনের সাথে শান্তি আলোচনায় বসতে পারেন, যদি ইস্তাম্বুল আলোচনার ভিত্তিতে এগোয় শান্তি প্রক্রিয়া।
পুতিন বলেন, ‘২০২২ সালের শেষে ইস্তাম্বুলে আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছেছিলাম। শততমবার বলছি, এই নথি ইউক্রেনের উদ্যোগেই প্রণীত ছিল। অর্থাৎ তারা এতে সম্মত ছিল। কিন্তু তারপর কোনো কারণে প্রত্যাখ্যান করে। ইউক্রেনের সাথে পূর্বশর্ত ছাড়া আলোচনায় বসতে আমরা প্রস্তুত। কিন্তু ইস্তাম্বুল চুক্তি এবং যুদ্ধক্ষেত্রের এখনকার বাস্তবতার ভিত্তিতে আলোচনা হতে হবে।’
মধ্যপ্রাচ্যে শক্তি বিস্তারে দীর্ঘদিনের সহযোগী বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনে কোনোভাবেই রাশিয়া পরাজিত নয় বলে স্পষ্ট উল্লেখ করেন পুতিন। আরও জানান, বর্তমানে মস্কোতে আশ্রিত সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আসাদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। সিরীয় ভূখণ্ডে ইসরাইলের অবস্থানের নিন্দাও জানান তিনি।
পুতিন আরো বলেন, ‘সিরীয় আরব প্রজাতন্ত্রে শান্তি প্রতিষ্ঠার দিকে তাকিয়ে আছি। সেখানে পরিস্থিতি যারা সামলাচ্ছে, তাদের সাথে অঞ্চলটির অন্যান্য দেশের মতো আমরাও সুসম্পর্ক রাখতে চাই। তাদের বেশিরভাগই চায় সিরিয়ায় যেন আমাদের সামরিক ঘাঁটি থাকে। বিষয়টি ভেবে দেখবো।’
সাড়ে চার ঘণ্টার দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর পর্বে ২৪ লাখের বেশি প্রশ্ন জমা পড়েছিল পুতিনের কাছে। কথা বলেছেন রাশিয়ার অর্থনীতি, কৃষ্ণসাগরে ভাসমান তেল ও পরিবেশ দূষণ, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিযোগিতাসহ নানা বিষয়ে।