নির্বাচনের ১০ দিন পরও ফলাফল নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না দেশটির। বেশিরভাগ আসনে জয় পায় ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তবে সংসদে তাদেরকেই বসতে হচ্ছে বিরোধী দলের আসনে। জোট সরকার নিয়ে দলগুলোর দৌড়ঝাঁপের মধ্যে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাওলপিন্ডির কমিশনার লিয়াকত আলি চাতার।
নির্বাচনে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার ভোট কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন তিনি। এক সংবাদ সম্মেলন এই ঘোষণা দিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন কমিশনার লিয়াকত। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। এখন তার অবস্থান অজানা। নির্বাচনী সামগ্রী ও তথ্য-উপাত্তের সুরক্ষায় তার অফিস সিল করে দিয়েছে পুলিশ। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের কর্মী, রিটার্নিং ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
যদিও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ঘটনা তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। সচিব, বিশেষ সচিব ও অতিরিক্ত মহাপরিচালকসহ নির্বাচন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠন করা হয় একটি উচ্চ-পর্যায়ের কমিটি।নির্বাচনী কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে কমিশন। এরপর কমিশনারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, বেলুচিস্তানের জাতীয়তাবাদী দলগুলোর জোট নেতারা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। রাজনীতিতে সামরিক হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি জানায় তারা। কারাবন্দি ইমরান খানের সমর্থকরাও ভোট কারচুপির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে।
এক সমর্থক বলেন, 'জনগণের অধিকার এবং তাদের ভোট থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এই অন্যায়ের প্রতিবাদে সবাই রাস্তায় নেমেছে।'
আরেকজন বলেন, 'ইমরান খানের ডাকে দেশব্যাপী বিক্ষোভে নেমেছে সবাই। পাকিস্তান জাতির যা হয়েছে, তা চুরি- ডাকাতির চেয়েও বড়।'
নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পাকিস্তান মানবাধিকার কমিশন। নির্বাচনী ফলাফল স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে নিরীক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে, জোট সরকারে ক্ষমতা ভাগাভাগির ফর্মুলা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি বিলওয়াল ভুট্টো ও নওয়াজ শরীফের দল। তবে দুই পক্ষেরই দাবি আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তিন দফার বৈঠক শেষে সোমবার ফের বৈঠকের বসতে যাচ্ছে দলগুলো। পাকিস্তানে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের ওপর জোর দিচ্ছেন জোটের নেতারা।