রপ্তানির নামে অর্থপাচার, রাজস্ব ফাঁকি বন্ধের আশা

0

প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বন্দরে বসানো হয়েছে দু'টি রপ্তানি কনটেইনার স্ক্যানার। এর মাধ্যমে মার্কিন কোস্টগার্ডের শর্ত পূরণ করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচার, রাজস্ব ফাঁকি বন্ধে এই দু'টি স্ক্যানার বড় ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা।

আগামীকাল শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) কাল নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর স্ক্যানার দু'টি চালু করা হবে। মূলত চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসই স্ক্যানার দু'টি চালাবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের ১২টি গেটের মধ্যে বর্তমানে ৫টিতে স্থায়ী ও দু'টিতে মোবাইল স্ক্যানার রয়েছে। শুল্ক ফাঁকি, চোরাচালান রোধ ও ঝুঁকিপূর্ণ পণ্য আমদানি বন্ধে এগুলো দিয়ে এতদিন আমদানি পণ্যের কনটেইনার স্ক্যানিং করা হতো। তবে রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনারের ক্ষেত্রে এই সুবিধা না থাকায় তার সুযোগ নেয় একটি চক্র। জালিয়াতির আশ্রয় নেয় তৈরি পোশাক, খাদ্যসামগ্রী, কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানিতে।

সাম্প্রতিক সময়ে শুল্ক গোয়েন্দার একাধিক তদন্তে বেরিয়ে আসে কোড জালিয়াতি, ওজন বেশি ও দাম কম দেখানোসহ নানা উপায়ে পণ্য রপ্তানির আড়ালে প্রায় হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে অসাধু রপ্তানিকারকরা। এমনকি কোন পণ্য রপ্তানি না করেও বিপুল অঙ্কের সরকারি প্রণোদনা হাতিয়ে নেয় কেউ কেউ।

যদিও ২০১৭ সালেই রপ্তানি পণ্য স্ক্যানিংয়ের শর্ত দিয়েছিলো মার্কিন কোস্ট গার্ড। বাস্তবায়ন করতে বলেছিলো আন্তর্জাতিক শিপ অ্যান্ড পোর্ট ফ্যাসিলিটি সিকিউরিটি বা আইএসপিএস কোড। সেই শর্ত পূরণে চীন থেকে প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে দু'টি স্ক্যানার কিনেছে চট্টগ্রাম বন্দর।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, 'শিপমেন্টের জন্য কার্গোর ভিতর কোন ধরনের পণ্য আছে তা এখান থেকেই নিশ্চিত হতে চায়। যদিও স্ক্যানারগুলো কাস্টমসের কেনা উচিত তবুও সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কেনা হয়েছে। যা কিছুদিন আগে চলে এসেছে।'

গেল বছরের অক্টোবরে স্ক্যানার দু'টি আসার পর সম্প্রতি বন্দরের ৪ নম্বর ও সিপিএআর গেইটে স্থাপন করা হয়। এতে পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি রপ্তানির আড়ালে অর্থ পাচার বন্ধ এবং বিশ্বে বন্দরের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে হবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। তবে মাত্র দু'টি স্ক্যানারে রপ্তানি পণ্য স্ক্যানিং করা হলে শিপমেন্টজটে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রপ্তানিকারকদের।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, 'অন্য দেশে আমাদের একটা ভালো চাহিদা আছে। এখান থেকে যাওয়ার সময় যদি সঠিকভাবে যায়, নিরাপত্তা বিষয়গুলো যদি আমরা দেশ থেকে নিয়ে নেই; তবে আমাদের দেশের চাহিদা সেখানে অক্ষুন্ন থাকবে। এর জন্য স্ক্যানার দরকার।'

৯২ শতাংশ পণ্য আমদানি ও রপ্তানি হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। আইএসপিএস কোড অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দরের সকল গেটে কন্টেইনার স্ক্যানার বসানোর শর্ত রয়েছে।

এসএস