চলতি মৌসুমে ৫০ হাজার টন আখ মাড়াই করে ৩ হাজার টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। তবে মৌসুমের প্রায় অর্ধেক সময় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মিল বন্ধ থাকায় এবার ২ হাজার টন চিনি পাওয়া যেতে পারে।
তবে আশার খরব হচ্ছে প্রতিবছর একমাত্র কাঁচামাল আখের অভাবে উৎপাদন বন্ধ রাখতে হলেও এবছর তার কোন ঘাটতি ছিল না।
মোবারকগঞ্জ চিনি কলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, 'চাষির কাছ থেকে সরাসরি আখ ক্রয়ের মাধ্যমে দেশিয় চিনি উৎপাদন করা এবং দক্ষিণবঙ্গের সবচেয়ে ভারী শিল্পটাকে টিকিয়ে রাখা। মাঠে আখ গ্রহণ বৃদ্ধি না করলে এই কাঁচামাল পাওয়া যাবে না। আখের অভাবে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হবে এবং একসময় চিনি কলটা বন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য হবে।'
গেলো ২০২২-২৩ অর্থবছরে আখের অভাবে ২৮ দিনে মাড়াই মৌসুম শেষ হয়। পরে সেবছর আখের দাম ১৮০ থেকে ৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এতে আখ চাষে চাষিরা উদ্বুদ্ধ হন।
এবছর ৩ হাজার ১ একর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও ৫ হাজার একর জমিতে উৎপাদন হয়েছে। সামনের মৌসুমে আখের দাম আরও বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪০ টাকা। এতে মাঠের পর মাঠ চাষিরা আখ চাষ করছেন।
চাষিরা বলেন, 'আখের দাম ভালো পাইতাছি তাই এবার বেশি চাষ করতেছি।'
মোবারকগঞ্জ চিনি কলের মহাব্যবস্থাপক কৃষিবিদ গৌতম কুমার মন্ডল বলেন, 'বিএসআরআই ৪৬ ও ৪৮ এই জাত দুটি এখন খুবই ভালো। বিশেষ করে প্রত্যেকটি জাতে ১ একর জমিতে ৪০ টনের মতো ফলন হচ্ছে। এটা চাষ করার পাশাপাশি কৃষকরা যদি সাথী ফসল চাষ করতে পারে। তাহলে তারা লাভবান হবে।'
যান্ত্রিক ত্রুটিতে মিল বন্ধ থাকলেও এবছর শ্রমিক কর্মচারীদের কোন বকেয়া নেই। এতে সামনের বছর আখের চাষ আরও বাড়বে বলছেন মোবারকগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুল। বলেন, 'সরকার আখের মূল্য বৃদ্ধি করায় চাষিদের মধ্যে একটা উৎফুল্লভাব এসেছে। তারা স্বত:স্ফূর্তভাবে আখ রোপণ করছে। আশা করি ২০২৪-২৫ মাড়াই মৌসুমে ৩ থেকে ৪ মাস মিল চালু রাখতে পারবো এবং চিনি আহরণের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ করতে পারবো।'
গেল ২০২২-২৩ মৌসুমে ৩৫ হাজার ৩৬০ টন আখ মাড়াই করা হয়। যা থেকে উৎপাদন হয় ১ হাজার ৭৪৫ টন চিনি।