যুদ্ধ , মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

গাজায় সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা

শাহনুর শাকিব

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ডায়রিয়ার মত পানিবাহিত রোগের পাশাপাশি, ব্রঙ্কাইটিস, হেপাটাইটিস এবং বিভিন্ন চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বাস্তুচ্যুতরা।

ইসরাইলি বর্বরতায় এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সংকটে গাজার স্বাস্থ্যখাত। ভয়াবহ ঝুঁকিতে বিধ্বস্ত নগরীর শিশুরা। এরইমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ব্রঙ্কাইটিস, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগ।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের মাঝে সবচেয়ে বেশি ছড়াচ্ছে ব্রঙ্কাইটিস। এখন পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

এছাড়া ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৮০ হাজারের বেশি শিশু। এরমধ্যে ৭০ শতাংশ শিশুর বয়স এক থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে। হেপাটাইটিস রোগী শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৫শ'।

ফিলিস্তিনের সংক্রামক রোগ বিভাগের পরিচালক রামি আল আবাদলা জানান, এখন পর্যন্ত যেসব রোগী আমাদের কাছে এসেছে বেশিরভাগই সংক্রমিত রোগের। এরমধ্যে ব্রঙ্কাইটিস, ডায়রিয়া এবং চর্মরোগই বেশি। হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগীও আছেন। আক্রান্তদের বেশিরভাগই শিশু।

আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহ করা পানিতে শ্যাওলা পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবি করছেন বাস্তুচ্যুতরা। এছাড়া নিরাপদ স্যানিটেশন সেবার কাজ বন্ধ থাকায় বিভিন্ন রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে।

ভুক্তভোগীরা বলেন, এখানে যেই পানি আনা হয় তা পান করার উপযোগী নয়। এর ভেতরে শ্যাওলা পাওয়া যায়। যার কারণে শিশুদের মাঝে পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত নয়। যা রোগের অন্যতম উৎস।

সংক্রমণ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ভ্যাক্সিনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে অঞ্চলটিতে। হাসপাতালগুলো বন্ধ থাকায় চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না আহতদের। ক্ষতস্থানে ছড়াচ্ছে ইনফেকশন।

এমন বিপর্যয় পরিস্থিতির মধ্যে গাজার ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্য অবকাঠামোকে দ্রুত সুরক্ষার আওতায় আনার আহ্বান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। তা না হলে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ভূ-খণ্ডটিতে সংক্রামক রোগ মহামারিতে রূপ নেবে এবং চ্যালেঞ্জের মাত্রা বাড়িয়ে তুলবে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস জনান, বোমা হামলার চেয়ে গাজায় রোগাক্রান্ত হয়ে বেশি মানুষ মারা যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা থেকে বাস্তুচ্যুতদের রক্ষা করতে হবে। তাদের জীবনের মৌলিক চাহিদার পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা দরকার। যার মধ্যে আছে-খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানি। এগুলো হাসপাতাল পরিচালনার জন্য অনেক জরুরি।

এদিকে চিকিৎসা নিশ্চিতে এখন পর্যন্ত গাজা থেকে ২০০ ফিলিস্তিনিকে নিয়ে গেছে তুর্কিয়ে। সবশেষ বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৪৪ জন রোগী। তাদের বেশিরভাগই শিশু। এরমধ্যে যারা ক্যান্সার আক্রান্ত তাদের চিকিৎসা প্রয়োজন।

এমএসআরএস

আরও পড়ুন:

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর