কোন বিধিনিষেধের তোয়াক্কা করছে না তেহরান। সব উপেক্ষা করে নিজেদের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ইরান। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বলছে, অক্টোবর পর্যন্ত ইরানের ইউরেনিয়াম মজুত ছিলো ৪ হাজার ৪৮৬ কেজি, যা আগস্টের তুলনায় ৬৯১ কেজি বেশি। অথচ ২০১৫ সালের চুক্তি অনুযায়ী, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সীমাবদ্ধতা ছিলো ২০২ কেজিতে।
ইরান এখন ১২৮ কেজি ইউরেনিয়ামের মজুত নিয়ে ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ। ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধকরণ থেকে মাত্র কয়েকধাপ দূরে। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, এতো বেশি ইউরেনিয়ামে কয়েকটি পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব। বিধিনিষেধের কারণে দেশটিতে আর নির্বিঘ্নে পরমাণু কার্যক্রম তদারকি করতে পারছে না আইএইএ। পরমাণু কার্যক্রম তদারকি করতেও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জন্য সীমাবদ্ধতা তৈরি করেছে তেহরান।
দেশটির অজ্ঞাত দুটি স্থানে ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি পাওয়া গেলেও কোন সদুত্তর দেয়নি ইরান। প্রতি প্রান্তিকে পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে প্রতিবেদন দেয়ার কথা থাকলেও সে বিষয়েও কোন আগ্রহ নেই ইরানের। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পর থেকেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়িয়েছে তেহরান। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার পর্যবেক্ষণও সীমিত করে দিয়েছে ইরান।
যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ পশ্চিমা বিশ্ব এবং আইএইএ'র ৩৫ বোর্ড অব গভর্নরের কাছে ইউরেনিয়াম নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য তেহরানের দেয়ার কথা ছিলো। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার আরও কিছু নজরদারি ক্যামেরা স্থাপনের কথা ছিলো। তেহরান সবকিছুতেই বাধা দিচ্ছে। ইরানের পরমাণু কার্যক্রম তদারকিতে পরির্দশক দল যাওয়াও এখন বন্ধ। এই ঘটনাকে অপ্রত্যাশিত মনে করছে আইএইএ।
সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের জ্বালানি রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি ইরাক আর দক্ষিণ কোরিয়ায় জব্দ করা অর্থও ছাড় করে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু পরমাণু ইস্যু নিয়ে কোন সমঝোতায় এগোচ্ছে না তেহরান। মার্কিন বিশ্লেষকরা বলছেন, যেভাবে তেহরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, তাতে কয়েকমাসের মধ্যে পরমাণু বোমা তৈরি করার শঙ্কা রয়েছে। যদিও বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তেহরান।