দেশে এখন , গ্রামীণ কৃষি
কৃষি

বৈশাখ মানেই বোরো ধান ঘরে তোলা

বৈশাখ ঘিরে হাওরের মানুষের সুখ-দুঃখ। এ অঞ্চলে বৈশাখ মানেই বোরো ধান ঘরে তোলার সময়। তাই তো বৈশাখের প্রথম দিনে পাকা ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন হাওরের কৃষকরা।

হাওরাঞ্চলে লোক মুখে প্রচলিত বছরের প্রথম দিনে ঘরে ফসল তুললে সারাবছর থাকে না অভাব- তাইতো সুনামগঞ্জের হাওরে চলছে পাকা ধান কাটার উৎসব। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কৃষকরা সোনালী ধান কাটতে মাঠে নামেন কৃষকরা।

এমনই একজন সুনামগঞ্জ বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার করচার হাওরের কৃষক উস্তার আলী। মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে পাঁচ একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন। সেই ধানের বাম্পার ফলন হলেও ধান ঘরে তোলা নিয়ে ছিল চরম শঙ্কা। তবে সেই শঙ্কা কাটিয়ে অবশেষে বৈশাখের প্রথম দিনে ধান কেটে মাড়াই দিয়ে প্রখর রোদে শুকাচ্ছেন তিনি। সেই সাথে এবার উৎপাদন আর সংগ্রহ ভালো হওয়ায় চোখে মুখে আনন্দ তার।

কৃষক উস্তার আলী বলেন, 'কাটা থেকে মাড়াই সব মিলিয়ে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ১ হাজার টাকা মণ করে ধান বিক্রি হবে।'

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সুনামগঞ্জের ১৩৭টি হাওরে এবছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বৈশাখের প্রথম দিনে এই অঞ্চলের ৩০টি হাওরে লক্ষাধিক কৃষক ধান কাটতে মাঠে নামেন। একদিকে কৃষকরা ধান কাটছেন অন্যদিকে কৃষাণীরা সেই ধান রোদে শুকাচ্ছেন কেউবা আবার সেই ধান বস্তা বন্দি করে সংরক্ষণ করছেন।

হাওরের একজন কৃষক বলেন, 'বৈশাখের প্রথম দিনে আসছি ধান কাটতে। সবাই মিলে আনন্দ করে ধান কাটার উৎসবে মেতেছি।'

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জে দুই লাখ ২৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন কৃষকরা। যেখান থেকে এবছর ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০২ টন ধান উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য চার হাজার একশ দশ কোটি টাকা।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, 'মাঠ পর্যায় থেকে কৃষকদের সর্বদা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। কৃষকদের সহযোগিতা করতে আমাদের কন্ট্রোল রুম খোলা আছে।'

চলতি মৌসুমে বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে ৬০ হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে যায়। যার বাজার মূল্য প্রায় কোটি টাকা।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর