গোটা বিশ্বজুড়ে ফুটবলের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বি। ফলে এই খেলায় পৃষ্ঠপোষক, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। তারই সুযোগে ফুটবলাররাও আয় করেন অঢেল অর্থ। আর এই ফুটবলারদের যারা তুলে ধরেন বা চুক্তি করিয়ে দেন, সেই এজেন্টরাও পান মোটা অংক। সেই অংকটা কেমন? শুনলে চোখ কপালে উঠে যাবে। ফিফার একটি প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরে কেবল ফুটবল এজেন্টদের পেছনে ক্লাব এবং ফুটবলাররা ব্যয় করেছেন ৮৮৮ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। আগের বছরের তুলনায় যেটি প্রায় ৪২ শতাংশ বেশি।
বিপুল অংকের এই অর্থের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এসেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর কাছ থেকে। ফিফার প্রতিবেদন বলছে, এজেন্টদের পেছনে ইংলিশ ক্লাবগুলো চলতি বছরে ব্যয় করেছে ২৮১.৩ মিলিয়ন ডলার। গেল বছর এই অংকটা ছিল ২০৩.২ মিলিয়ন ডলার।
এজেন্টদের জন্য অর্থ ব্যয়ে এবার লা লিগা, সিরি আ, বুন্দেসলিগাকেও ছাড়িয়ে গেছে সৌদি আরব। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, করিম বেনজেমা, নেইমারের মত তারকাদের দলে ভিড়িয়েছে সৌদি ক্লাবগুলো। তার জন্য এজেন্টদের পেছনে ব্যয় করতে হয়েছে ৮৬ মিলিয়ন ডলার। ফুটবল এজেন্টদের জন্য অর্থ ব্যয়ে ইপিএলের পরপরই তাদের অবস্থান।
তবে এজেন্টদের মোটা অংকের অর্থের চাহিদায় লাগাম টেনে ধরতে চায় কর্তাব্যক্তিরা। ফিফা ফুটবল এজেন্ট রেগুলেশন্স নামে নীতিমালা প্রনয়ন করা হয়েছে এরইমধ্যে, যেটি ১লা অক্টোবর থেকে কার্যকর করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যেসব ফুটবলারদের বেতন বার্ষিক ২ লাখ ডলারের বেশি তাদের কাছ থেকে ৩ শতাংশ এবং যাদের বেতন বার্ষিক ২ লাখ ডলারের কম তাদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ অর্থ গ্রহণ করতে পারবেন এজেন্টরা।
ফিফার এমন নীতিমালার বিরুদ্ধে আপিল করেছে বেশ কয়েকটি শীর্ষ এজেন্সি। তবে ব্রিটিশ সালিশি আদালত তাদের আপিল প্রত্যাখান করে উল্টো কয়েকজন এজেন্টের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ এনেছে। এরমধ্যে আছে অর্থ পাচার, প্রতারণা ও মানব পাচারের মত স্পর্শকাতর অভিযোগও। বিশেষ করে বিভিন্ন মহাদেশের কিশোর ফুটবলারদের ইউরোপিয়ান ফুটবলের লোভ দেখিয়ে পাচার করে দেয়ার মত অভিযোগও উঠেছে। দেখা যাক, ফুটবলের এজেন্টরা এসব অভিযোগকে কিভাবে পাশ কাটান।