জুলাই পরবর্তী সময়ে শহরের দেয়ালে দেয়ালে কেন রাষ্ট্রকে মেরামতের এতো কথা? ইতিহাস বলে তাজা রক্ত শুকিয়ে যাবার আগে যে দাবি লেখা হয় দেয়ালে, যে স্লোগানে প্রকম্পিত হয় কংক্রিটে ঘেরা অলিগলি, যে আকাঙ্ক্ষা থাকে তারুণ্যের চোখে মুখে, তাতো মিথ্যে হবার নয়। তবে কেন বছর না পেরোতেই সব ফিকে হয়ে যায়? কেন সব ফেলে আবারও ফিরে আসে মেনে নেয়ার অভ্যাস?
রাজনীতিতে মত-দ্বিমতে কথার লড়াই কিংবা মাঠে দাবি আদায়ের মহড়া, এসব তো চলবেই, তবে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র যে সঠিক পথে ছিল না সেটাতো এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাহলে দেশের ভালো যে পথে সেখানে নিজের মতের মতই কেন সব হতে হবে? তবে আশার কথা রাষ্ট্র সংস্কারের কিছু ইস্যুতে সবদল একমতে পৌঁছেছে। এখন সিদ্ধান্তের ভার জনগণের ওপর।
জুলাই সনদে পিআর এর মতো জটিল ইস্যু হয়তো অনেকেই বোঝে না। কিংবা সাধারণ মানুষ জানেও না এ সংস্কার তার জীবনে কি পরিবর্তন আনবে। তবে এমন কিছু বিষয় আছে, এ যেমন বিভাগীয় শহরে উচ্চ আদালত, স্বাধীন প্রক্রিয়ায় পিএসসির নিয়োগের মত সংস্কার মানুষের জীবনের সাথে সরাসরি জড়িত। কিন্তু প্রান্তিক এ খেটে খাওয়া মানুষেরা কতটুকু জানে হ্যাঁ/না ভোটেই আছে তাদের মুক্তি।
এক কৃষক জানান, হ্যাঁ-না ভোট নিয়ে অনেক মানুষ চিন্তিত। আমি এখনো বুঝিনি। আরেকজন জানান, এ পর্যন্ত কোনো কিছু শুনি নি। দশজনে যেদিকে যায় আমিও সেদিকে যাব।
দেশে এর আগেও গণভোটের নজির আছে। তবে এবারেরটা অনেকটাই আলাদা। দিন আনা দিন খাওয়া সহজ সরল মানুষের কাছে গণভোট মানে হচ্ছে দেশের যেটা ভালো হবে সেখানেই ভোট দিবেন।
যে দেশের মূল ভোটারের বড় অংশ এখনো অক্ষর জ্ঞানহীন। অন্যের কথাই যারা হ্যাঁ/না মাথা নাড়ায়, তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে কালিতে ছাপা এক গুচ্ছ শব্দ ধাঁধা। নিজ থেকে যা সে পড়তেও পারে না। তাহলে কে বোঝাবে তাকে গণভোটের গুরুত্ব?
যারা একটু বোঝেন তাদের মাঝেও আছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এখনো অনেক কিছু বোঝার বাকি আছে বলেও মনে করেন তারা।




