‘হাসিনাকে ফেরতের বিষয়ে ভারত নানা অজুহাতে নাকচ করার চেষ্টা করবে’

দেশে এখন
0

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারাধীন মামলাগুলোর মধ্যে তিন থেকে চারটির রায় অক্টোবরের মধ্যে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আসামি রয়েছেন। আজ (মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান। পুরো বিচারকাজ এক বছরের মধ্যে শেষ করার কথা জানালেও পালিয়ে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী সরকার যে গণহত্যা চালিয়েছিল তার বিচারের জন্য সংস্কার করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এরপর গেল ১৭ অক্টোবর শুরু হয় বিচার কাজ। এখন পর্যন্ত ১৮ মামলায় ১২২ জনকে বিচারের মুখোমুখি করলো প্রসিকিউশন।

তবে ট্রাইব্যুনালের তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে বিচার প্রত্যাশীদের মধ্যে দেখা দেয় হতাশা। গেল ৬ ফেব্রুয়ারি তাই শহীদ পরিবার জড়ো হন শাহবাগে। এরপর প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করেন তারা। আশ্বাস পান গণ-অভ্যুত্থানে চলা হত্যাকাণ্ডের বিচারের।

এমন পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমে কথা বলেন আইন উপদেষ্টা। তুলে ধরেন জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের অগ্রগতি। জানান, মামলার তদন্ত এ মাসেই শেষ হবে আর অক্টোবরের মধ্যে তিন থেকে চারটি মামলার রায় দেবে ট্রাইব্যুনাল। জাতিসংঘের জুলাই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবেদন প্রকাশ হলে বিচারের স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আসিফ নজরুল বলেন, 'চারটি মামলার তদন্ত কাজ এ মাসে সম্পন্ন হচ্ছে। এরপর চার্জশিট গঠন করার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হবে। অক্টোবরের মধ্যে আমরা তিন চারঠি মামলার রায় পেতে যাচ্ছি বলে আশা করি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা এবং শীর্ষস্থানীয় কিছু পুলিশ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা এসব মামলায় আসামি হিসেবে রয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে আমাদের জাতিসংঘের যে তদন্ত টিম আছে, উনাদের রিপোর্টটা পাবেন। এই রিপোর্টটা আমাদের এই তদন্ত কাজটাকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য পাশাপাশি সহজতর করার ক্ষেত্রে অনেক অবদান রাখবে।'

আগামী এক বছরের মধ্যে বিচারকাজ শেষ হবে উল্লেখ করে পালিয়ে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

আসিফ নজরুল বলেন, 'যারা পলাতক আছে, পলাতকের বিচারের বিধান রয়েছে। এখন আমরা তো আনার সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। এখন ভারতের যে মনোভঙ্গি এটা দেখে মনে হচ্ছে তারা এটা নানা অজুহাতে নাকচ করার চেষ্টা করবে। বরং তারা শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে তাকে অবাধে বাংলাদেশ সম্পর্কে কুৎসামূলক, উসকানিমূলক বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলতে দিয়ে তারা বাংলাদেশের অস্থিতিশীলতা তৈরির যে প্রচেষ্টা করছে তাতে আমাদের কাছে মনে হয় না এই আইনটা সরল বিশ্বাসে প্রতিপালন করার ইচ্ছা তাদের রয়েছে।'

এদিকে সোমবার রাতে দ্বিতীয়বারের মত সংশোধন করা ট্রাইব্যুনাল আইনে তদন্তকালে নথিপত্র জব্দ,আসামিদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা, এবং সম্পত্তি জব্দের ক্ষমতা দেয়া হয় ট্রাইব্যুনালকে।

এসএস