৬০ বর্গমাইলের নগরী হলেও চট্টগ্রামে জনসংখ্যার সাথে অনিয়ন্ত্রিত হারে বাড়ছে যানবাহনের চাপ। বিআরটিএ'র হিসেবে নগরে দিনে নতুন করে নিবন্ধিত হচ্ছে শতাধিক যান। চলছে ১৩ হাজার সিএনজি অটোরিক্সা, ৪০ হাজার গাড়ি, সাড়ে তিন হাজার গণপরিবহনসহ লাখ লাখ রিকশা। এত এত যানবাহন আর ব্যস্ত সড়ক অথচ এখনও এই নগরে নেই কোনো আদর্শ পার্কিং ব্যবস্থা। আছে বাস বে, ট্রাক টার্মিনাল বা হাসপাতাল-স্কুল মার্কেটভিত্তিক পর্যাপ্ত পার্কিং সুবিধার সংকট। তাই যে যেখানে যেভাবে খুশি গাড়ি রাখায় হলো এই নগরের চিরাচরিত পার্কিং সংস্কৃতি।
এই বিশৃঙ্খলা ও যানজট সমস্যা সমাধানে গেল জুনে নগরের আগ্রাবাদে চালু হয়েছিল পে পার্কিং সুবিধা। তবে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মাসখানেক পরেই বন্ধ হয়ে যায় এ সেবা। এখন পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে। সেজন্য নতুন চুক্তির মাধ্যমে মুখ থুবড়ে পড়া এই প্রকল্পকে নব প্রাণ দিল উদ্যোক্তারা। ছয়মাস পর বুধবার (২৯ জানুয়ারি) নগরের আগ্রাবাদ কমার্স কলেজ সড়কে এই নব যাত্রার উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র ডা শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, 'শুধু আগ্রাবাদ নয়, সারা চট্টগ্রাম শহরে এই প্রজেক্টটি পাইলট প্রজেক্টের মাধ্যমে সাকসেসফুলি তারা করতে পারে তাহলে চট্টগ্রাম শহরে আমরা এই কাজটির মাধ্যমে যানজট অনেকটা কমিয়ে আনতে পারবো।'
পরীক্ষামূলক এই পার্কিং প্রকল্পে ২০০টি গাড়ি ও ৭০টি মোটরসাইকেল রাখা যাবে। এক্ষেত্রে গাড়ির জন্য ঘণ্টাপ্রতি ৩০ ও মোটরসাইকেলের জন্য ১০ টাকা গুণতে হবে। এই সেবার মাধ্যমে অ্যাপ বা সরাসরি এসে ফাঁকা স্লটে পার্ক করতে পারছেন চালকরা। আয়ের ৩৫ ভাগ পাবে সিটি করপোরেশন আর ৬৫ ভাগ বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান।
একজন চালক বলেন, 'এখন গাড়ি রাখা নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে না। আগে থেকেই বুক করে সেখানে রাখা যাবে।'
বিট্রেক সলিউশনের সিইও তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, 'প্রোপারলি একটা স্ট্র্যাকচার ওয়েতে না রাখার কারণে গাড়ি চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়, যানজট হয়। এই জায়গাটাই সিটি করপোরেশনের জায়গাতে সবাই গাড়ি রাখছে। সেটা ম্যানেজ করার জন্য আমাদের ভলান্টিয়ার থাকবে।'
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ ছাড়া এই পে পার্কিং প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছুটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে মনে করেন এই কর্মকর্তা। তাই পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তা চাইবে তারা। আর প্রকল্পটি আবারও মুখ থুবড়ে পড়লে বাস্তবায়ন সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিলেন মেয়র।
রাতের বেলা এই পার্কিং স্পেসকে পর্যায়ক্রমে হলিডে মার্কেট হিসেবে চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে সিটি করপোরেশনের।