শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদন বলছে, আওয়ামী শাসনামলের সাড়ে ১৫ বছরে ২৩০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ পাচার হয়েছে। যার প্রভাবে এই উচ্চ মূল্যস্ফীতি। ভঙ্গুর অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বৈদেশিক ঋণ আর ঘাটতি বাজেট মেটাতে জনগণকে বইতে হচ্ছে বাড়তি ভ্যাট-ট্যাক্সের বোঝা।
শনিবার আগারগাঁওয়ে বিআইসিসি'তে শ্বেতপত্র এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সেমিনারে কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় জানান, জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা না করেই ভ্যাট ও শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘আমরা দেখে আশ্চর্য হয়ে গেছি কীভাবে অবিবেচকভাবে ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। যে কোনো একটি দেশে যদি আপনি কর সংগ্রহ করতে চান তাহলে ক্রমান্বয়ে তাকে প্রত্যক্ষ করের কাছে নিয়ে যাবে। আমরা দেখলাম না কোনো প্রত্যক্ষ কর আহরণের জন্য কোনো পরিকল্পনা। যার টিআইএন আছে কিন্তু যারা ট্যাক্স দেয় না, তাদের প্রতি কী আচরণ করা হবে তার কিন্তু কোনো পরিকল্পনা নেই। অর্থাৎ আপনি পরোক্ষ করের দিকে আগে গেলেন প্রত্যক্ষ করকে বাদ রেখে।’
বাংলাদেশ এলডিসি'র ফাঁদে পড়েছে মন্তব্য করে দেবপ্রিয় জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আরও কৌশলী হতে হবে। সেইসাথে অর্থনৈতিক সংস্কারে সরকারকে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দেন ড. দেবপ্রিয়।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমার ভুল হলে আপনারা তা সংশোধন করে দিবেন। এই প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার সংসদ থেকে আরম্ভ করে স্থানীয় সরকার পর্যন্ত যতখানি মনোযোগ পাচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ততখানি মনোযোগ পাচ্ছে ন। এবং যেখানে উচ্চমূল্যস্ফীতিতে মানবজীবন এরকম কষ্টের ভেতরে আছে, মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত।'
মূলত টাকা পাচারের উদ্দেশ্যেই বিগত সরকার বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। এসব প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য চেয়েও না পাওয়ার অভিযোগ করেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ড. মুস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘শুধু মেগা প্রজেক্ট না, বিভিন্ন দুর্নীতি ইত্যাদির মাধ্যমে এই টাকাটা বের হয়ে আসছে।’ সেমিনারে প্রবাসীদের উন্নয়নে বাজেটের অন্তত এক শতাংশ বরাদ্দ রাখার দাবি তোলেন বক্তারা।