তেঁতুলিয়ার সর্দারপাড়ার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব জাকির হোসেন। জীবনের তিন দশক মহানন্দা থেকে পাথর তুলে সংসার চালিয়েছেন। কিন্তু নদীতে এখন আর আগের মতো পাথর না মেলায় হতাশা তার চোখে মুখে।
স্রোতস্বিনী মহানন্দার বুকে এখন ধু-ধু বালুচর। আগের মতো পানি না থাকায় মিলছে না পাথর। তবুও ভোর হতেই পাথর তুলে রুটি-রুজির আশায় নদীতে নামেন শ্রমিকরা। আগে দিনভর পাথর তুলতে পারলেও এখন দুপুর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। তার সাথে যোগ হয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা।
দেশের সর্ব উত্তরের সীমান্ত বাংলাবান্ধা দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে মহানন্দা নদী। এরপর আবার বাংলাবান্ধা থেকে পুরাতন তেতুঁলিয়া পর্যন্ত প্রায় ২৮ কিলোমিটার ঘুরে আবার ভারতে মিশেছে। এই অংশটুকই পরিণত হয়েছে স্থানীয় মানুষের জীবন-জীবিকার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে। বহমান মহানন্দার বয়ে আনা পাথর তুলে সংসার চলে ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষের।
মহানন্দাসহ পঞ্চগড়ের বিভিন্ন নদীর পাথর পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। যাতে দৈনিক কোটি টাকার বেশি পাথর কেনা-বেচা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আশ্বাস, পাথর শ্রমিকদের যে কোনো প্রয়োজনে পাশে আছেন তারা। পাশাপাশি তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানেরও চেষ্টা চলছে।
পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি বলেন, ‘বর্তমানে এই নদী থেকে খুব কম পাথর পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে পাথর শ্রমিকরা কর্মসংস্থানের সংকটে পড়েছে। তাদের কর্মসংস্থানের সমস্যা দূরীকরণের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে এবং আমরা নিজেরাও প্রণোদনা দেয়ার চেষ্টা করছি।’
মহানন্দা কেবল একটি নদী নয়, হাজার হাজার মানুষের জীবন-জীবিকার নাম। স্থানীয়দের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে এই নদী টিকিয়ে রাখার জোর দাবি স্থানীয়দের।