কৃষি
দেশে এখন
0

আধুনিক কৃষি ব্যবস্থায় বদলে যাচ্ছে রংপুর-বগুড়ার কৃষকের ভাগ্য

আধুনিক কৃষি ব্যবস্থায় বদলে যাচ্ছে রংপুর ও বগুড়ার কৃষকের ভাগ্য। উন্নত কৃষি যন্ত্রাংশ, বীজ ও প্রশিক্ষণে গড়ে উঠছে 'ফার্মিং স্মার্ট ভিলেজ'। অন্যদিকে, পরিবেশবান্ধব পলিনেট হাউজ প্রযুক্তি ব্যবহারে লাভবান হচ্ছেন উত্তরবঙ্গের কৃষকরা। ব্যাংক ও উন্নয়ন সংস্থা বলছে, টেকসই কৃষির জন্য অর্থায়ন অব্যাহত থাকবে।

উত্তরের দিগন্তজোড়া ফসলের জমিন। এ অঞ্চলের অর্থনীতির রসদ এই কৃষি জমি। সময়ের সাথে এখানকার কৃষিতে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। বদলে যাচ্ছে চাষাবাদের ধরন। আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার রোল মডেল হয়ে উঠেছে রংপুরের গ্রাম নাগদাহ ও ধনতলা।

উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি, আধুনিক কৃষি যন্ত্রাংশের হাত ধরে এরই মধ্যে 'ফার্মিং স্মার্ট ভিলেজ' হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে গ্রাম দুটি। এখানকার প্রায় চারশ'র বেশি কৃষক এসব সুবিধা নিয়ে গড়ে তুলছেন কৃষির মডেল ভিলেজ।

কৃষকদের একজন বলেন, ‘মাটির পরীক্ষার পর আমি তরমুজ লাগিয়েছিলাম খুব ভালো ফলন হয়েছে। মাটি পরীক্ষা না করলে জানতাম না মাটির গুণাগুণ এত ভালো।’

স্ট্যার্ন্ডাড চার্টার্ড ব্যাংকের অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সাসটেইনেবল অ্যাগ্রিকালচার ফাউন্ডেশন। যাদের সহায়তায় প্রশিক্ষণ প্রদান, উন্নত মানের বীজ সরবরাহ, শস্যবীমাসহ নানা সুবিধা দেয়া হচ্ছে কৃষকদের। এছাড়া প্রাকৃতিক হিমাগারে ফসল সংরক্ষণ, উন্নত চারার নার্সারি তৈরিসহ বিভিন্ন পরামর্শের মাধ্যমে কৃষকদের সময় ও অতিরিক্ত ব্যয় সাশ্রয় করা হচ্ছে।

এসএএফ প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্টের পরিচালক আব্দুর রউফ বলেন, ‘ভার্মি কম্পোস্টের একটা প্লান্ট তৈরি করে দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে নারী উদ্যোক্তারা ইনকাম শুরু করছে। এখানে একজন উদ্যোক্তা ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারে।’

উত্তরের আরেক জেলা বগুড়ায় কৃষিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে পরিবেশবান্ধব পলি নেট হাউজ। সম্ভাবনাময় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন হচ্ছে বিভিন্ন সবজির চারা।

সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি নিয়ন্ত্রণ ও পোকামাকড় রুখে দিয়ে চারা উৎপাদনের পাশাপাশি আগাম ফসল ফলাচ্ছেন কৃষকরা। ফুলকপি, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, মরিচ, টমেটোসহ বিভিন্ন ফসলের চারা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।

চাষিদের একজন বলেন, ‘খোলা জায়গায় করলে খরচ বেশি। রোগ বালাই বেশি হয়। আর পলি হাউজে করলে তা কমে আসে।’

কৃষির টেকসই উন্নয়ন, সুষ্ঠু বিপণন ব্যবস্থা ও ভবিষ্যতে খাদ্য চাহিদার কথা বিবেচনা করে পলিনেট হাউজের আধিক্য বাড়াতে পরামর্শসহ সহায়তা দিচ্ছে উন্নয়ন সংস্থাগুলো।

টিএমএসএসের পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, ‘জমিতে রাতে বৃষ্টি আসলে তা নষ্ট হয়ে যাবে। কীটপতঙ্গ অনায়াসে আক্রমণ করতে পারে। পলিনেট হাউজে চাষ করলে কীটপতঙ্গ, কুয়াশা, ঝড়-বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাবে। ফলন ভালো হবে।’

কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, জলবায়ু সহনশীল কৃষির গুরুত্ব বাড়ানোর পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থাকে কৃষকবান্ধব করা জরুরি।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রচুর পরিমাণে চারা উৎপাদন করা হয়। এগুলো শুধু তারাই ব্যবহার করে না বাণিজ্যিকভাবে তার বিক্রি করে থাকে। এতে করে তারা লাভবান হয়ে থাকে।’

এদিকে, কৃষিতে নতুন স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও আধুনিকায়নে অর্থায়নের পাশাপাশি বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি প্রকল্প পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোর।

স্ট্যার্ন্ডাড চার্টার্ড ব্যাংকের ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিংয়ের হেপ অব কর্পোরেট বিটপী দাশ চৌধুরী বলেন, ‘কৃষক যেটাতে বেশি লাভবান হয় সেরকম কাজ করছি। সারাদেশব্যাপী আমরা কাজ করা চেষ্টা করেছি।

ইএ