আফজাল হোসেন বলেন, ‘সপ্তাহের তিন দিনও অফিস করেন না এখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তাই সেবা না পেয়ে আমাদের ঘুরে যেতে হয়। সরকারের পক্ষ থেকে এখানে বিনামূল্যে সেবা ও ওষুধ দেয়ার ব্যবস্থা থাকলেও তার কোনো কিছুই জুটে না আমাদের ভাগ্যে। কষ্ট করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল বা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিতে হয়।’
এক বছরের শিশুর হাতে চুলকানির ওষুধের জন্য এসেছিলেন রাজিয়া বেগম নামের এক গৃহবধূ। তিনিও সেবা না পেয়ে চলে যান। তিনি অভিযোগ করেন, ইতিপূর্বে এখানে যতবার চিকিৎসার জন্য এসেছি, ততবার ১৫ থেকে ২০ টাকা দিয়ে সরকারি ওষুধ নিতে হয়েছে।
শুধু আফজাল হোসেন বা রাজিয়া বেগম নয়, এই কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মজিদা জাহান মিতু অনিয়মিত অফিস করার তিন ওয়ার্ডের ২০ সহস্রাধিক মানুষের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, সপ্তাহে শনি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা হতে ৩টা পর্যন্ত অফিস করার নিয়ম থাকলেও মজিদা জাহান মিতু ২০১৬ সালে যোগদানের পর থেকে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিনের বেশি অফিস করেন না।
এছাড়াও ১০টার পর অফিসে এসে ১২টার আগেই চলে যান। এতে স্থানীয় সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের টাঙ্গাইল শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। টাকার বিনিময়ে সরকারি ওষুধ বিতরণ ও রোগী এবং রোগীর স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে মজিদা জাহান মিতুর বিরুদ্ধে।
কলেজ ছাত্র রুবেল মিয়া বলেন, ‘এই ক্লিনিক থেকে ২০ ভাগ চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ পায় না সাধারণ মানুষ।’
ফটকে তালা দেখে সাংবাদিক পরিচয়ে ফোন করলে ভাটচান্দা মাগুরাটা কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মজিদা জাহান মিতু মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার ল্যাপটপ নষ্ট হয়েছে। এছাড়াও অফিসে মাসিক রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তাই অফিসে আজ আসবো না।’
৫ মিনিট পর ফোন করে বলেন, ‘আমি এখনই আসছি।’ ১৫ মিনিট পর ১২টায় তিনি দ্রুত অফিসে আসেন।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী এখানে সেবা নিতে আসেন। যখন ওষুধ বেশি থাকে তখন, এই সংখ্যা বেড়ে যায়।’
ভাটচান্দা মাগুরাটা কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘বুধবার তাকে ক্লিনিকে না পেয়ে ফোন করলে তিনি আমার ফোন রিসিভ করেন নি। এই ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩ ওয়ার্ডের ২০ হাজারের অধিক মানুষ চিকিৎসা সেবা পাওয়ার কথা। কিন্তু অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন ‘
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মিতুর বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’