দেশে এখন
0

পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে সংঘবদ্ধ চক্র

শরীয়তপুরের পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে সংঘবদ্ধ চক্র। প্রতিদিন উত্তোলন করা হচ্ছে লাখ লাখ ঘন ফুট বালু। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনে হুমকিতে পড়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধসহ বহু স্থাপনা। প্রশাসনের অভিযানে জেল জরিমানার পরও থামানো যাচ্ছে না অবৈধ বালু উত্তোলন।

শরীয়তপুরের পদ্মা নদীর নড়িয়া এলাকা। নদীর মাঝে সারি সারি অবৈধ ড্রেজার। অপরিকল্পিতভাবে তোলা হচ্ছে বালু। একের পর এক বাল্কহেডযোগে নদী পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে দিনের আলো কমতেই নদী তীরে নোঙর করা শতাধিক ড্রেজার সচল হয়ে ওঠে। অভিযোগ আছে, প্রভাবশালী একটি মহলের ছত্র ছায়ায় রাতের আধাঁরেই কয়েক লাখ ঘন মিটার বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে একাধিক সংঘবদ্ধ চক্র।

নদীর যে অংশে বালু উত্তোলন হচ্ছে তার কাছেই দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পদ্মার ডান তীর রক্ষা বাঁধ। যে বাঁধ রক্ষা করেছে নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলাকে। এরই মধ্যে ধ্বসে গেছে পদ্মা সেতু সংলগ্ন বাঁধের ১০০ মিটার অংশ। এতে আতঙ্কিত পদ্মা পাড়ের মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘এটা তার ইচ্ছা মতো বালু তুলছে অবৈধভাবে।’

আরেকজন বলেন, ‘রাতে ড্রেজারের শব্দে ঘুমানো যায় না।’

অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেয়ার কথা জানায় ছাত্রজনতা। নদীতীর রক্ষায় প্রশাসনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।

ছাত্র জনতার প্রতিনিধি বলেন, ‘অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে চলে গিয়েছে। আবার নতুন করে আমরা ভাঙনের ভয়ে আছি।’

বালু উত্তোলনের এই মহোৎসবে মেতেছেন নড়িয়ার আজাহার শিকারি, তারা মিয়া ও জাজিরার রফিক খাঁ, ফয়জলসহ আরও অন্তত ১০ থেকে ১২ জন। গোপনে ধারণ করা ভিডিওতে চক্রের অন্যতম সদস্য আজাহার শিকারির কথায়ও মেলে সেই তথ্যের প্রমাণ। চেষ্টা করেন টাকা দিয়ে টিম এখনকে ম্যানেজের।

বালু সিন্ডিকেট চক্রের মূল হোতা আজাহার শিকারি বলেন, ‘আমি আসলে সবার সাথে সমন্বয়ের কাজ করি। এছাড়া আর কিছুই না।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, অপরিকল্পিত ড্রেজিং বন্ধ না হলে ব্যাপক নদী ভাঙনের পাশাপাশি ঝুঁকিতে পড়বে তীর রক্ষা বাঁধ। বালু উত্তোলন বন্ধে নানা পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে প্রশাসন।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান বলেন, ‘তীর রক্ষা বাঁধের কাছেই যদি ড্রেজিং করে বালু উত্তোলন করা হয় তাহলে নদী পাড়ের মানুষ ঝুঁকিতে থাকবে।’

সম্প্রতি পদ্মা নদীতে অভিযান চালিয়ে একটি অবৈধ ড্রেজার জব্দসহ ১৭ জনকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ৮ জনকে কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ইএ