স্বৈরাচারের প্রতি তীব্র ঘৃণা ও পলায়নের সাক্ষী হয়েছে ২০২৪। এই সাক্ষ্য বয়ে চলেছে জনপদ থেকে নগর, রাজপথ থেকে দেয়ালে।
৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাশে মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার গ্রাফিতি একপ্রকার ঘৃণাস্তম্ভে পরিণত হয়। তবে, গত শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতের আঁধারে সেই ঘৃণাস্তম্ভ মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানালে প্রক্টর ঘটনাস্থলে এসে দুঃখ প্রকাশ করেন।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, '৩ আগস্ট ছাত্র-জনতা সবাই মিলে খুনি হাসিনা, রক্তখেকোর যে প্রতিচ্ছবি এখানে বহিঃপ্রকাশ করেছিল সবাই রক্ত মেরে, লাল রঙ মেরে, জুতা মেরে, গোবর মেরে। সেই খুনি হাসিনার ঘৃণাস্তম্ভকে মুছে দেয়ার প্রয়াস চালিয়েছে। আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাৎক্ষণিক তার প্রতিবাদ জানিয়েছে।'
অন্য একজন শিক্ষার্থী বলেন, 'মুছে দেয়ার যে ব্যাপারটা, এর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে এখনও প্রশাসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের যারা এনভেলার ছিল, তারাই কিন্তু আছে এবং এরাই বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়, যে জায়গায় হাসিনা এই যে হাজার হাজার ছাত্র হত্যা করলো, তার যে দগদগে স্মৃতি মানুষের মধ্যে আছে এই জিনিসগুলো মুছে দেয়ার জন্য আওয়ামী এনভেলারদেরই একটা প্রক্রিয়া। এবং এটা বিশ্ববিদ্যালয় বুঝে হোক আর অতি চালাকি করেই হোক এই ফাঁদে পা দিচ্ছে।'
রোববার রাত ১০টা থেকে ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে পুনরায় আঁকা শুরু হয় স্বৈরাচার শেখ হাসিনার গ্রাফিতি।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, '৫ আগস্টের আগের ছবিটাই আমরা চাচ্ছি যে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসতে। কারণ ওইটার প্রতি আমাদের মূল ঘৃণাটা।'
এসময় সারা দেশেই স্বৈরাচারের চিহ্ন মুছে দেয়ার চেষ্টা করছে একটি মহল, এমন অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, গ্রাফিতি, দেয়াল লিখন রক্ষা রাখতে হবে আগামী প্রজন্মের জন্য।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, 'এই গ্রাফিতি অবশ্যই রাখা উচিত, কারণ এটা দেখেই আগামীর প্রজন্ম বুঝতে পারবে বাংলাদেশে একটি স্বৈরশাসক ছিল যারা বাংলাদেশের মানুষের উপরে কী পরিমাণ নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়েছে এটিই তার একটি নিদর্শন হয়ে স্মৃতি হিসেবে রাখা।'
সারারাত ধরে ছাত্রদের এই প্রয়াস জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের ইতিহাস রোমন্থনের। সোমবার সকালে আবার জুলাইয়ের ৪ তারিখের মতো শিক্ষার্থীরা জড়ো হবেন রাজু ভাস্কর্যের সামনে।