২০০২ সালে পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ায় পর থেকে এখন পর্যন্ত বরিশাল সিটি করপোরেশনের বকেয়া তিনশো পঁচাশি কোটি টাকা। বিগত সব পৌর মেয়র আর চেয়ারম্যানদের আমলের বকেয়া পাওনা বাড়তে বাড়তে এমন অবস্থা। পাওনাদাররা টাকার জন্য তাগিদ দিলেও দেনা পরিশোধে সদুত্তর জানা নেই করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, ‘প্রায় ৩৮৫ কোটি টাকার মতো বকেয়া রয়েছে। এর মধ্যে ঠিকাদারদের কাছে পাওনা রয়েছে ৩০০ কোটি টাকার মতো, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া আছে ৬৪ কোটি টাকা, আর অবসরপ্রাপ্তদের কাছে পাওনা ২০ কোটি টাকার উপরে।’
সিটি করপোরেশনের বাজেটে আয়ের প্রধান উৎস চারটি। রাজস্ব আয়, রাজস্ব খাত ও উন্নয়ন খাতে সরকারি অনুদান এবং সরকারি ও বৈদেশিক বিভিন্ন প্রকল্প। এসব খাত থেকে প্রাপ্ত অর্থের যথাযথ ব্যবহার না হওয়ায় বকেয়া পাওনা বেড়েছে বলে মনে করেন সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র মজিবুর রহমান সরোয়ার বলেন, ‘ যে টাকা আসে তা সঠিকভাবে ব্যবহার হয় না। আর যে প্রকল্পের জন্য টাকা আনা তা অন্যত্র ব্যবহার করা হয়।সঠিকভাবে টাকা ব্যবহার করা হয় এখানে আসলে টাকা ব্যবহারের বুদ্ধি ও কৌশল রয়েছে।’
নাগরিক সমাজ বলছে, উন্নয়ন কার্যক্রমের পাশাপাশি বকেয়া পরিশোধে উদ্যোগ নিতে হবে। তবে নগরবাসীর উপর বাড়তি করের বোঝা না চাপানোর আহ্বান।
বরিশাল সচেতন নাগরিক ফোরামের সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম খসরু বলেন, ‘ এ থেকে উত্তরণ করতে হলে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি পথ বের করা দরকার। সেক্ষেত্রে জনগণের ওপর যেন কোনো বাড়তি কোনো চাপ না আসে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।’
বর্তমান প্রশাসক বলছেন, নানা খাতে সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। অডিটের মাধ্যমে প্রকৃত চিত্র বের করার পর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসক রায়হান কাওসার বলেন, ‘ আমাকে আগে খুঁজে বের করতে হবে এটা কেন হয়েছে এবং এখানে অডিটের বিষয় রয়েছে। এতে কোনো শুভঙ্করের ফাঁকি আছে কিনা সেটাও দেখতে হবে। অডিট করা হলে তাহলে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।’
সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ, বিএনপি থেকে নির্বাচিত হয়ে মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন ৫ জন। নির্বাচিত হবার পর বিগত আমলের ঋণের তথ্য প্রকাশিত হলেও কোনো সুরাহা হয়নি।