উন্নত সড়ক যোগাযোগ ও রেলওয়ে সুবিধা থাকায় ব্যবসায়িক পরিবেশের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা নাটোর। তবে সদরের স্বীকৃতি পাওয়ার ৩ দশকেও শিল্প বাণিজ্যের দিক দিয়ে এগোতে পারেনি জেলাটি। গড়ে উঠেনি কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান। এতে দিন দিন বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা।
বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের নামে নাটোরের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ এই ক্যাম্পাসে পড়াশুনা করেন অন্তত ১২ হাজার শিক্ষার্থী। চালু রয়েছে ডিগ্রি, অনার্স এবং মাস্টার্স বিভাগ। এটিসহ সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ২০টি কলেজ থেকে প্রতিবছর শিক্ষা জীবন শেষ করছে ৫-৬ হাজার শিক্ষার্থী। তবে স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানের অভাবে রাজধানীমুখী হতে হচ্ছে তাদের।
ভৌগোলিক দিক থেকে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে উত্তরের জেলা নাটোর। স্থানীয় অর্থনীতিও কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু তারপরও স্থানীয় বেকার যুবকদের জন্য নেই পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ। শিক্ষাবিদরা বলছেন, ঢাকার ওপর চাপ কমানোর পাশাপাশি বেকারত্ব দূর করতে স্থানীয়ভাবে কলকারখানা স্থাপনের পাশাপাশি শিল্পকারখানা বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দিতে হবে।
নাটোর এনএস সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খসরু আলম বলেন, ‘শিল্পকারখানা যেগুলো রয়েছে সেই কারখানাগুলো আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেয়া দরকার। এতে ঢাকার চাপ কমবে। পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থী তার নিজ জন্মস্থানে থেকেই এই কাজগুলো করতে পারবে।’
গেল সরকারের আমলে জেলায় কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিসিক সম্প্রসারণ, পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ১০টি প্রকল্প নেয়া হয়। এর মধ্যে শুধু শেষ হয়েছে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের মাটি ভরাটের কাজ। তবে আলোর মুখ দেখেনি বাকি প্রকল্পগুলো।
তবে শিল্প উদ্যোক্তারা বলছে, নাটোরে বিনিয়োগের জন্য প্রধান অন্তরায় রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। নিরাপদ বিনিয়োগের পরিবেশ না থাকায় আগ্রহ হারাচ্ছেন শিল্প উদ্যোক্তারা। এতে বাড়ছে বেকারত্বের সংখ্যা।
নাটোর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, ‘নাটোরের অর্থনীতি ফলোকে ধরে রাখতে চাইলে প্রথমে নাটোরের আইনশৃঙ্খলা উন্নত হতে হবে। গ্যাস নিয়ে এসে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’
সবশেষ বিবিএস জরিপ বলছে, দেশে বর্তমানে মোট বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ। এ অবস্থায় শিল্পসহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেওয়ার তাগিদ শিক্ষাবিদদের।