দিনভর উত্তাল চট্টগ্রামের আদালত চত্বর। চিন্ময় দাসকে নেয়া প্রিজনভ্যান আটকে ভক্ত-সমর্থকদের বিক্ষোভ। গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রত্যাহার দাবিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে উত্তেজনা। দফায় দফায় চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে পুলিশ। দুর্বৃত্তের হামলায় নিহত হন এক আইনজীবী।
আজ (মঙ্গলবার , ২৬ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর পরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পরে এই মামলায় বুধবার সকাল ১১টায় ফের জামিন শুনানির নির্দেশ দেন আদালত। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ভক্তদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে উত্তপ্ত অবস্থার মধ্যেই আদালত পাড়া থেকে সাইফুল ইসলাম নামে এক আইনজীবীকে তুলে নিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়। আহত হয় অন্তত ২৫ জন।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'এখানে যখন নিয়ে আসছে, উনার খুব খারাপ অবস্থা ছিল। উনাকে মাথায় মানে কানের পাশ থেকে শুরু করে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। বেশি রক্তপাত হওয়ায় সাথে সাথে মারা যান তিনি। এখানে যখন নিয়ে আসা হয় তখন তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।'
ভাঙচুর করা হয় দোকানপাট ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে বুধবার বিচারিক কার্যক্রমে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেয় আইনজীবী সমিতি। বিচার দাবিতে সন্ধ্যার পর মাঠে নামে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয় বিজিবি।
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সবাপতি নাজিম উদ্দীন বলেন, 'সরকারের কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা অনুরোধ করতে চাই এই বিষয়টি তদন্ত করবেন কেন পুলিশের আসামি নেয়ার প্রিজন ব্যান কেন যেতে দেয়নি। কারা যেতে দেয়নি, কীভাবে ছিল, আমাদের কোর্ট বিল্ডিংয়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে। এবং যে ঘটনাস্থলে আমাদের বিজ্ঞ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে মারা হয়েছে সেখানেও সিটি ক্যামেরা রয়েছে।'
নগরীর নিউমার্কেট মোড়ের স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানার মামলা হয়।