প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের আধার দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। পর্যটন মৌসুমে এ দ্বীপের মোহনীয় সৌন্দর্য উপভোগে প্রতিদিনই ভিড় করেন হাজার হাজার পর্যটক।
তবে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে নাফ নদী দিয়ে বন্ধ টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌযান চলাচল। গেল ২ বছর ধরে এই রুটে চলতে পারছে না কোন জাহাজ। গত বছর বিকল্প পথে বঙ্গোপসাগর হয়ে উখিয়ার ইনানী জেটি থেকে কিছু জাহাজ সেন্টমার্টিন গেলেও এ বছর নানা সংকটে পড়ে জাহাজ চলাচল এখনও শুরু করা যায়নি।
এতে চরম দু:সময় পার করছেন দ্বীপটির বাসিন্দা, যাদের জীবিকা পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। বন্ধ প্রায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। হুমকিতে পড়েছে কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘যারা সেখানে বসবাস করছে তাদের সাথে সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিবেশ সম্মত পর্যটন নগরী হোক, পরিবেশ বাঁচুক, পর্যটক আসুক।’
আরেকজন বলেন, ‘সেন্টমার্টিনের স্থানীয় মানুষের সাথে বসে কীভাবে পরিবেশ রক্ষা করে পর্যটনকে এগিয়ে নেয়া যায়।’
আরেকজন বাসিন্দা বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে কোনো বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই। সরকার যদি এটার ব্যবস্থা করে দেই তাহলে আমাদের কোনো ট্যুরিস্ট লাগবে না।’
এদিকে, পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় দ্বীপটিতে নভেম্বরে রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে তা শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতিদিন যেতে পারবে মাত্র ২ হাজার পর্যটক। বছরের অন্যান্য সময়ে কোনো পর্যটক দ্বীপ ভ্রমণে যেতে পারবেন না। এমন পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড় দানায় ক্ষতিগ্রস্ত ইনানী জেটির সংস্কার চলছে। অনুমতি সাপেক্ষে জাহাজ চলবে কক্সবাজার শহর থেকে।
তবে কক্সবাজার শহর থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে জাহাজে সেন্টমার্টিন যেতে সময় লাগে ৬-৭ ঘণ্টা। রাত্রিযাপনে বিধিনিষেধ আরোপ করায় অনেকে নিরুৎসাহিত হবে দ্বীপ ভ্রমণে। যার নেতিবাচক প্রভাব কক্সবাজারের পুরো পর্যটন খাতে পড়বে বলে মনে করেন ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা।
সী ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, শত শত নতুন উদ্যোক্তা এই পর্যটন শিল্প নিয়ে ব্যবসা শুরু উদ্যোগ নিয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা লোন নিয়েছে, বিনিয়োগ করেছে, এই লোনের কি হবে।
দ্বীপের পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি পর্যটন শিল্পকে বাঁচাতে বিধিনিষেধ শিথিল করার দাবি জানিয়েছেন দ্বীপের বাসিন্দারা।