দেশে এখন
0

জলবায়ু ক্ষতিপূরণে প্রান্তিক দেশগুলোর প্রয়োজন প্রায় ৬ লাখ কোটি ডলার

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিপূরণে প্রান্তিক দেশগুলোর প্রতিবছর প্রয়োজন প্রায় ৬ লাখ কোটি ডলার। যা দিতে গড়িমসি করছে বিশ্ব মোড়লরা। যতটুকু প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তাও ছাড়ের ক্ষেত্রে নেই কোনো অগ্রগতি। এছাড়া এবারের জলবায়ু সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, কানাডা, চীনের মত দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা না আসায় ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে শঙ্কা আরো ঘনীভূত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নত দেশগুলো না আসায় প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় ব্যাহত হতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলা ও পরিবেশ রক্ষায় সবক্ষেত্রে গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করা দরকার। সেখানে বাংলাদেশসহ এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায় বাড়ছে এর ব্যবহার। তাই গ্যাস ব্যবহার বন্ধের দাবিতে জলবায়ু সম্মেলনের বিশ্বমঞ্চে এসব মহাদেশ থেকে আসা পরিবেশ কর্মীরা প্রতিবাদে হয়েছেন একাট্টা।

বাংলাদেশের পরিবেশ কর্মীরা বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বলছেন, যেখানে বিশ্বব্যাপী পরিবেশ বিরোধী গ্যাস বন্ধের দাবি উঠেছে সেখানে বাংলাদেশে নতুন আরও ৪১টি গ্যাস বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা চলমান।

পরিবেশ কর্মী শরীফ জামিল বলেন, ‘যে পদ্ধতিতে বাংলাদেশ বা এশিয়ার দেশগুলোতে গ্যাসের বিস্তার হচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমাদের এই প্রোগ্রাম।’

সম্মেলন কেন্দ্রের বাইরে যখন এমন বিক্ষোভ তখন ভেতরে আলোচনার টেবিলে চলছে পরিবেশ ধ্বংসের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দরকষাকষি।

তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে চীন কার্বন নিঃসরণ করেছে ৩২.৮৮ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্র ১২.৬, ভারত ৬.৯ আর রাশিয়া ৪ শতাংশ।

অথচ এবারের কপ সম্মেলনে এই চারটি দেশের কোন রাষ্ট্রপ্রধানই উপস্থিত হননি। অপর একটি তথ‍্য বলছে, উন্নত দেশ ও আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো জলবায়ু প্রভাবের ক্ষতি মোকাবেলায় বছরে ১৭০ বিলিয়ন ডলার সংস্থানের কথা বললেও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো বলছে, দরকার ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

অথচ বিপুল পরিমাণ কার্বন নিংসরণ করেও অর্থ দিতেই চাচ্ছে না চীন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিশ্ব মোড়লরা। জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন, রাষ্ট্রপ্রধানদের এই অনুপস্থিতি অর্থ ছাড়ে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য মো. হাফিজ খান বলেন, ‘আমরা একটা আলাদা সাবগোল চাই যেটা নতুন কমিটমেন্ট হবে। এইটা নিয়ে পলিটিক্যাল দেশ নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। রাষ্ট্রপ্রধানদের এই অনুপস্থিতি অর্থ ছাড়ে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।’

তারা বলছেন, অ্যাডাপ্টেশন, মিটিগেশন ও লস এন্ড ড্যামেজ খাতে সহায়তা নয়, বরং ঋণ দিতে চায় বিশ্ব নেতারা। যাতে রাজি নয় বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো। ঋণের বিষয়টিকে বিশেষজ্ঞরা দেখছেন, জলবায়ু নিয়ে বিশ্ব মোড়লদের ব্যবসা হিসেবে।

জলবায়ু বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১শ’ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। আমাদের মতো দেশ এই হিসাব মানতে রাজি না। অ্যাডাপ্টেশন, মিটিগেশন ও লস এন্ড ড্যামেজ খাতে সহায়তা নয়, বরং ঋণ দিতে চায় বিশ্ব নেতারা। তারা মানে তারা জলবায়ু নিয়ে ব্যবসা করতে চাই।’

ইএ