কৃষি
দেশে এখন
0

টানা বৃষ্টিতে পেঁপের ফলনে শতকোটি টাকার ক্ষতির শঙ্কা

টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলে মৌসুমে পেঁপের ফলন ও দাম ভাল পাওয়ার পরও টানা বৃষ্টিতে শতকোটি টাকার ক্ষতির শঙ্কা। চাষিরা বলছেন, সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে বাগানের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ গাছ মারা যাচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, ধান, গম ও শীতকালীন সবজিসহ অন্যান্য ফসলের মতো পেঁপে চাষিদের প্রণোদনা দেয়ার সুযোগ নেই।

দুশ্চিন্তায় ভুগছেন মধুপুরের দানকবান্ধা গ্রামের সাব্বির আহমেদ। ১০ বিঘা জমিতে ১২ লাখ টাকা খরচ করে টপলেডি জাতের পেঁপের চাষ করেছিলেন তিনি। বাগানের বেশিরভাগ গাছ মরে যাওয়ায় ক্ষতির শঙ্কা করছেন তিনি।

কৃষক সাব্বির হোসেন বলেন, ‘১০ বিঘা জমিতে আমি ২৫শ’ পেপের চারা লাগিয়েছি। সেখানে ২০ লাখ টাকার মতো বিক্রি করেছি। তবে টানা বৃষ্টির কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।’

শুধু সাব্বির নয়, মধপুরের বেরীবাইদ, দোখলা, আউশনারা, শোলাকুড়িসহ বিভিন্ন এলাকার চাষিদের টানা বৃষ্টিতে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। চলতি মৌসুমে মধুপুরে পেঁপে চাষে বাম্পার ফলন ও দাম ভাল পেলেও সম্প্রতি টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পানি জমে পেঁপে বাগান নষ্ট হয়ে লাখ লাখ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। গাছ মরে ঝরে পড়ছে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের পেঁপে ।

এ সব এলাকায় টপলেডি, গ্রীনলেডি, থাইসহ নানা জাতের পেঁপে চাষ হয়েছে। প্রতি কেজি পাকা পেঁপে পাইকারি বাজারে ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি গাছে ৩ থেকে ৪শ’ টাকা খরচ হলেও ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রির কথা ছিল। যার সবই এখন পচে যাচ্ছে তাই সরকারি সহযোগিতার দাবি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের একজন বলেন, ‘জমিতে পানি জমে থাকার কারণে পেঁপে গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

আরেকজন বলেন, ‘ঋণ নিয়ে চাষাবাদ শুরু করি কিন্তু এখন তো আমাদের চলার মতো অবস্থা নেই।’

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মধুপুরের পেঁপের মান ভাল ও খেতে সুস্বাদু এবং মিষ্টি হওয়ায় ঢাকাসহ সারা দেশেই ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভালো মানের পেঁপে বেশি দামে অগ্রিম টাকা দিয়ে কিনেছিলেন তারা। বৃষ্টিতে গাছ মরে যাওয়ায় সব পেঁপে একত্রে বাজারের উঠায় দাম কমে যাচ্ছে। তাই চালান তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা। টানা বৃষ্টিতে ৮ হাজার পেঁপে চাষির প্রায় ৮০ কোটি টকার ক্ষতি হয়েছে।

পাইকারি ব্যবসায়ীদের একজন বলেন,৫০ লাখ টাকার বাগান কিনেছিলে। কিন্তু বৃষ্টির পানির কারণে গাছ মরে যাওয়ায় পথে বসার মতো অবস্থা।

জলছত্র কাঁচামাল সংরক্ষণ বহুমুখী সমিতির সভাপতি আব্দুল হামিদ বলেন, ‘শুধু পেঁপে বাগানে ক্ষতি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকার উপরে।’

কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, ক্ষতি পোষাতে টেকনিক্যাল সার্পোট দেয়া ছাড়া ধান, গম ও শীতকালীন সবজিসহ অন্যান্য ফসলের মতো পেঁপে চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার সুযোগ নেই।

মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকুরা নাম্নী বলেন, ‘পেঁপে বাগানে আমাদের তেমন প্রোগ্রাম নেই। সেক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সার্পোট দেয়া ছাড়া আমাদের তেমন কিছু করার নেই।’

চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ১৫৩০ হেক্টর জমিতে ৩৮ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন পেঁপের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। শুধু মধুপুরেই চাষ হয়েছে ৮৪৫ হেক্টর।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর