অতিমূল্যের কারণে মাছ ও মাংস অনেক আগেই চলে গিয়েছিল নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। তাই ডিমই ছিল তাদের আমিষের চাহিদা পূরণের সাশ্রয়ী উৎস।
নানা-সময়ে ডিমের দরের ওঠানামা হলেও দাম নিয়ে চলছে নৈরাজ্য। পাইকারি থেকে খুচরা সবখানেই বাড়তে থাকে ডিমের দাম। এতে নড়েচড়ে বসে সরকার। ডিমের দাম ঠিক করে দিলেও বেধে দেয়া মূল্যে বিক্রি না করে বন্ধ রাখা হয় আড়ত।
ডিমের দামের অস্থিরতা কাটাতে গেলো বুধবার (১৬ অক্টোবর) উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিমে ১০ টাকা ৫৮ পয়সা দর বেধে দেয় ভোক্তা অধিদপ্তর। সিদ্ধান্ত হয় ঢাকার দুই পাইকারি বাজার তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজারের আড়তে প্রতিদিন সরাসরি ১০ লাখ করে ২০ লাখ ডিম সরবরাহ করার। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজধানীর তেজগাঁও বাজারে ডিমের আড়তে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সরাসরি ডিলারদের কাছে ডিম বিক্রি করে উৎপাদক ও সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন।
উৎপাদক পর্যায়ে ডিম বিক্রির ইতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়বে বলে দাবি ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান।
তিনি বলেন, 'যে সিন্ডিকেটের কথা বলা হলো, এটা একদম নেই, সেটি আমরা বলবো না। কারণ বাংলাদেশের অতীতে দেখেছে অনেকে রাস্তায় দাঁড়াতে পারেনি, অনেকে ব্যবসা করতে পারেনি। আবার অনেকে চুটিয়ে ব্যবসা করেছে। তাহলে এটা কেন হলো, এটা স্বাভাবিক অবস্থা ছিল না নিশ্চয়ই। আমরা এখন স্বাভাবিক অবস্থায় যেতে চাই। ডিমের সরবরাহ যদি ঠিক থাকে তাহলে ভোক্তারা কমদামে ডিম পাবে।'
তবে ডিমের বাজারে কোনো সিন্ডিকেট নেই বলে দাবি করপোরেট উৎপাদকদের।
একজন উৎপাদক বলেন, 'ডিম উৎপাদকের কোনো সিন্ডিকেট নেই। এবং হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। যেখানে হাজার হাজার খামারি প্রতিদিন লাখ লাখ ডিম বিক্রি করে। সেখানে কোনো সিন্ডিকেট হতে পারে না।'
দেশের শীর্ষস্থানীয় উৎপাদক প্রতিষ্ঠান সরকার নির্ধারিত দরে পাইকারি বাজারে ডিম সরবরাহ করলে দাম সহনীয় থাকবে বলে মনে করেন আড়ৎদাররা।
একজন আড়তদার বলেন, 'যে কোম্পানি আমাদের ন্যায্যমূল্যে ডিম দিচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে আমরা একটা কমপ্লেইন দেবো। আমাদের বাজারে ১০ লাখ পিস ডিম দেয়ার কথা সেখানে মাত্র তিন লাখ পিস আসছে। ডিম কমের কারণে বাজারে উথালপাতাল হয়েছে।'
প্রতিদিন ঢাকার দুই পাইকারি বাজার তেজগাঁও ও কাপ্তানবাজারের আড়তে সরাসরি ১০ লাখ করে ২০ লাখ ডিম সরবরাহ করবে ১৫টি প্রতিষ্ঠান।