নওগাঁয় আম উৎপাদনের ৭০ ভাগই হয় বরেন্দ্র ভূমি হিসেবে পরিচিত সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলায়। এসব এলাকার গাছে গাছে এখন শোভা পাচ্ছে আমের মুকুল। বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা।
বরেন্দ্র এলাকা হওয়ায় স্থানীয় আম সুস্বাদু ও সুমিষ্ট। উৎপাদন হয় আম্রপালি, গোপালভোগ, ফজলি, খিরসাপাত, ল্যাংড়া, হিমসাগর, হাঁড়িভাঙা, আশ্বিনা, বারী-৪ ও গুটি জাতের আম। তবে জেলার ৬০ শতাংশ বাগানই আম্রপালির। স্থানীয় আম ঢাকাসহ সরবরাহ হয়ে থাকে বিভিন্ন জেলায়। এমনকি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও বেশ সুনাম কুড়িয়েছে।
তবে এ বছর ফাল্গুনের মাঝামাঝি সময়ের বৃষ্টিতে মুকুলে পচানি রোগ হওয়ায় বাড়তি কীটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে চাষীদের। এতে বিঘাপ্রতি খরচ বাড়ছে অন্তত দেড় হাজার টাকা। চাষীরা বলছেন, গত বছর আমের পরিমাণ কম হওয়ায় মৌসুমের শুরুতে ভালো দাম ছিল। চলতি মৌসুমের শুরুতে চার হাজার টাকা মন আম বিক্রির আশা তাদের।
আম চাষিদের মধ্যে একজন বলেন, ‘মুকুল অনুযায়ী যদি আম আসে, তাহলে আমরা সাধারণ আম চাষিরা গত বছরের তুলনায় এবার অনেকাংশ লাভবান হবো বলে আশা করছি।’
আরেকজন চাষি বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে আমের মুকুলগুলোতে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। এই পচন রোধ করার জন্য আমরা এখন কীটনাশক ব্যবহার করছি।’
সিন্ডিকেটের বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে একজন আম চাষি বলেন, ‘যদি চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন সিন্ডিকেটগুলোর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ বরা যায় তাহলে খুব সহজেই ভোক্তারা সাশ্রয়ী মূল্যে আম খেতে পারবে।’
কৃষি বিভাগ বলছে, এ বছর জেলায় আম বাগানের পরিমাণ ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর। যা থেকে চার লাখ টনের বেশি আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই বাড়ছে আমে বাগান। আম রপ্তানি বাড়াতে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বাগানীদের সাথে সর্বদা যোগাযোগ রাখছে। তাদেরকে আমের মুকুল, রোগ বালাই, সেচ, সার ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি প্রতিটি বিষয়ে কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর নওগাঁয় আমের বাণিজ্যে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়াবে অন্তত তিন হাজার কোটি টাকা।