রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার মহিপুর ব্রিজের নিচে যেন উৎসব। মাছ ধরার নয় জ্বালানি সংগ্রহের। নদীতে ভেসে আসা কাঠ ও বাঁশের টুকরা, গাছের টুকরো সংগ্রহে ব্যস্ত ছোট থেকে বড় সবাই। নদীর পানি বাড়লে অনেকেই হয়ে যায় কর্মহীন। তাই নদীর কাছ থেকে জ্বালানি সংগ্রহ।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন জানান, ধান ক্ষেত তলিয়ে গেছে তাতে অবস্থা খুব খারাপ আমাদের। নদী ভাঙতে ভাঙতে পাশের বাড়ি পর্যন্ত চলে এসেছে। নদীর ওপাড়েই লালমনিরহাট জেলা। আদিতমারি উপজেলার মহিষখোচার চিত্র এখন দুর্ভোগের। রাস্তার উপরেই হাঁটু পানি, বাড়িঘরগুলো তলিয়ে গেছে বুক সমান। কোথাও কোথাও ঘরের চালও তলিয়ে গেছে পানিতে।
স্কুল পড়ুয়া এক কিশোর জানান, কোমর পানি স্কুলের মাঠে। বই-খাতা সব ভিজে গেছে। ঘরে পানি উঠার কারণে মানুষের বাসায় আশ্রয় নিছি বলেও জানান একজন।
থাকার জায়গা নেই, রান্নার উপায় নেই। গবাদি পশুগুলো আরও বেশি অসহায়। গোয়াল ছেড়ে আশ্রয় জুটেছে বিদ্যালয়ের বারান্দায়। প্রত্যেক বছরের অবর্ণনীয় কষ্ট গা সয়ে যাওয়া মানুষদের দাবি একটাই ত্রাণ নয়,পরিত্রাণ চাই।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। এভাবে কমতে থাকলে হয়তো দ্রুতই আপাত দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, 'আগামী ২৮ ঘণ্টায় দেশে এবং উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা একদমই কমে গেছে। সেক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি সামনে আর পানি বাড়ার আর সম্ভাবনা নেই।'
অবস্থা পরিদর্শনে বের হয়েছিলেন লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক। পুরো জেলায় আক্রান্ত দশ হাজার পরিবারের মধ্যেই ত্রাণ বিতরণের কথা জানালেন তিনি।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, 'মানুষ অনেক খারাপ অবস্থায় আছে । ঘর-বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে নেয় নাই। রাস্তার ওইপারে যে আত্মীয় স্বজন আছে ওইখানে আশ্রয় নিছে। তিন লাখ টাকার জি আর, শিশু খাদ্য, গো-খাদ্য দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আর ২০ টন চালের চালের ব্যবস্থা করেছি।'
এদিকে কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে বেড়েছে যমুনা নদীর পানি। এতে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বাসিন্দাদের মাঝে।