ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চরকালি গ্রামের কৃষক সাহেবআলী সর্দার। গত ১৫ দিন ধরে এভাবেই নিজের জমিতে হাঁটু পানিতে ডুবে পচে নষ্ট হওয়া আমনের চারা ও বীজ রক্ষায় চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু এসময় তার আমন আবাদে ব্যস্ত সময় পার করার কথা ছিল। সেই অনুযায়ী চলতি আমন মৌসুমে দুই বিঘা জমির পরিমাণ বীজতলা তৈরি করেছিলেন তিনি। ধারদেনা করে অধিক দামে আমনের চারা কিনে রোপণ ও করেছিলেন। তবে ফের অতিবৃষ্টির
পানিতে ডুবে থাকায় ক্ষতির মুখে তিনি। নতুন করে চারা কিনে রোপণ করার মতো সার্মথ্যও নেই।
একই এলাকার অপর কৃষক ফারুক মিঝি। চার বিঘা জমিতে তিনিও রোপণ করেছেন আমন চারা। আশা ছিল এ বছর ধান বিক্রি করে ধারদেনা পরিশোধ করবেন। কিন্তু অর্ধেক জমিতে রোপণ করতে পারেননি।
শুধু সাহেব আলী কিংবা ফারুক মিঝি নয় চলতি মৌসুমে জেলার হাজার হাজার কৃষকের বীজতলা নষ্ট হয়েছে জলাবদ্ধতায়। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও উচ্চজোয়ারে বীজতলা নষ্ট হওয়ার কারণে কৃষক ৩-৪ বার বীজ বুনেও আশানুরূপ চারা পায়নি। সব খেতই পানিতে টইটম্বুর।
পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও নেই। রোদ ওঠায় এ পানির মধ্যেই কৃষকরা চাষ দিয়ে আল ঠিক করে জমিতে আমনের চারা লাগাচ্ছে। তবে বেশিরভাগ জমি ফাঁকা। অতিরিক্ত টাকা দিয়েও চারা মিলছে না। এ অবস্থায় ভোলার কৃষকদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে।
সংকট নিরসনে ক্ষতিগ্রস্ত আমনের চারা সংরক্ষণে নানাবিধ পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিভাগ। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে প্রণোদনার মাধ্যমে সার বীজ দেওয়া হবে বলছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে , ভোলায় চলতি মৌসুমে এক লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৬ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যপূরণে ২৬ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে পাঁচ কেজি করে আমন বীজ ও ২০ কেজি করে বিভিন্ন ধরনের সার দেয়া হয়েছে।