ভোগীদের ভিসাসহ পাসপোর্ট দ্রুত ফেরত পাওয়ার দাবিতে আজ (সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর) সকাল নয়টা থেকে গুলশানের বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ পার্কে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষ। অবস্থান নেয়া প্রবাসীদের অনেকেরই পাসপোর্ট আটকা দুই বছর ধরে। তাদের দাবি ইতালি যাবার জন্য জমা দেয়া ভিসাসহ পাসপোর্ট ফেরতের।
পরে, অবস্থানকারীদের পক্ষে পাঁচজন সমন্বয়ক যান দূতাবাসে। রাষ্ট্রদূতের সাথে কথা বলে তারা গণমাধ্যমে জানান, ভিসার দীর্ঘসূত্রতায় দু:খ প্রকাশ করে এবং যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে রাষ্ট্রদূত বলেছেন, কোটার চেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে। আর জাল নথির প্রমাণও মিলেছে। তাই এমন দেরি হয়েছে। তবে, আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আশ্বাস মিলেছে।
সমন্বয়ক নুসরাত ইসলাম বলেন, 'আর কত? এটার নিশ্চয়তা কী? আর কতদিন কাজের জন্য অপেক্ষা করবো? তখন সে লিখিত, উল্লিখিত জানুয়ারি মাসের নাম বলে এসেছে। আমি চুক্তিবদ্ধভাবে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিও উল্লেখ করে দিলাম। এই সময়সীমার মধ্যে আপনাদের ওয়ার্ক ভিসাগুলো দিয়ে দেয়া হবে।'
তবে, সাত দিনের মধ্যে কমপক্ষে ১০০ ভিসা পাওয়ার নিশ্চয়তা চেয়েছে অবস্থানকারীরা। গেলো বছরের আগস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় লাখ খানেক ইতালি গমনেচ্ছুদের আবেদনের জবাব দেয়নি ভিএফএস গ্লোবাল। এতো লম্বা সময় ধরে কাটছে কর্মহীন জীবন।
আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, 'গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর আমি ভিএফএস গ্লোবালে পাসপোর্ট জমা দিয়েছি। আজ এক বছর হয়েছে। আমিসহ আমার পরিবার খুব কষ্টে আছি। আমার জমানো টাকা সব শেষ, এখন একটা মোটরসাইকেল আছে, সেটাও খেয়ে ফেলতে হবে।'
অনেকে অন্য দেশে কাজ করার সময় জমা দিয়েছিলেন কাগজ। আবেদন গ্রহণ হওয়ায় চলে এসেছেন দেশে। অপেক্ষার প্রহর গুণতে গিয়েই মেয়াদ ফুরিয়েছেন আগের দেশের। পাচ্ছেন না ইতালি যাবার ভিসাও। পরেছেন উভয় সংকটে।
ইতালির ভিসা দেয়া প্রতিষ্ঠান ভিএফএস গ্লোবালের দারস্থ হয়েও মেলেনি সদুত্তর। ঢাকায় ইতালি দূতাবাসের কাছেও পাওয়া যায়নি কোনো জবাব। তাই ভুক্তভোগীদের এই অবস্থান।
ভিসা প্রত্যাশী একজন বলেন, 'আজ দীর্ঘদিন যাবৎ আমি কোনো ভিসা পাইনি। আমার কুয়েতের ভিসাও শেষ হয়ে গিয়েছে। আমি ছয় মাসের ছুটি নিয়ে এসেছি, এটাও ক্যান্সেল হয়ে গিয়েছে। এখন কুয়েতের ভিসাও পাচ্ছি না, আর ইতালির ভিসাও হবে কিনা সেটা সিউর না।'
ইতালি গমনেচ্ছুদের গণ-অবস্থানের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ভিএফএস গ্লোবাল। আবেদনকারীর অনেকের নথি ও ওয়ার্ক পারমিট জাল দাবি করে তারা বলছে, যাচাইবাছাই করতেই এমন সময় ক্ষেপণ। যদি কেউ চায় তবে, আবেদন প্রত্যাহার বা পাসপোর্ট ফেরত নিতে পারেন।
তবে, সেই বিজ্ঞপ্তি মানতে নারাজ ইতালি গমনেচ্ছুরা। বলছেন, এতো বছর অপেক্ষার পর শুধু পাসপোর্ট ফেরত নিবেন না তারা।
ইতালি ডেতে ইচ্ছুক একজন বলেন, 'যদি শুধু পাসপোর্টের কথা বলে তাহলে এটা কোনো সিদ্ধান্ত হলো। এই এক থেকে দেড় পরিবার নিয়ে যে সাফার করেছি, এটার দায়ভার কে নেবে?'