বরিশাল নগরীর ফড়িয়াপট্টি এলাকা। নগরীর সবচেয়ে বড় চালের পাইকারি বাজার এটি। এখানে বগুড়া, নাটোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, রংপুর, মাদারীপুর সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চাল আসে।
ফড়িয়াপট্টির পাইকারি বাজারেই ২৫ কেজির বস্তায় প্রকার ভেদে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। পাইকারি বাজারে মিনিকেট ২৫ কেজির বস্তা ৫০ টাকা বেড়ে ১৬৮০-১৭০০ টাকা, আঠাশ ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে ১৪০০-১৫০০, পাইজাম ৪০ টাকা বেড়ে ১৪৮০ টাকা।
এছাড়া গুটি স্বর্ণা ২৫ কেজির বস্তায় ৮০ থেকে ১০০ টাকা বেড়ে ১৪০০ থেকে ১৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল মালিকরা দাম বাড়িয়ে দেয়ায় বর্তমানে তাদেরও বাড়তি দামে চাল কিনতে হচ্ছে।
ধানের দাম বাড়ায় চালের ওপর কিছুটা প্রভাব পড়েছে। তবে দুই আড়াই মাসের মধ্যে দাম কমে আসবে বলে ধারণা আড়তদারদের। এক ব্যবসায়ী জানান, মোকামে দাম বেশি থাকায় চাল বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আমাদের হাতে কিছু নেই। আমরা যে দামে কিনি সে দামেই বিক্রি করি।
আরেক ব্যবসায়ী জানান, মিল থেকে বলে ধানের দাম বেশি। প্রতি মনের দাম ৪০-৫০ টাকা কেজি।
চাউল আড়তদার মালিক সমিতির সহ–সভাপতি স্বপন কুমার দত্ত বলেন, ‘ধানের দাম কৃষক পর্যায়ে একটু বেশি। মিল মালিকরা বেশি দামে কেনে। আমাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এটি জানা গেছে। সে কারণে চালের দাম প্রকারভেদে ১০-২০ টাকা বেশি।’
পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। পাইকারি চালের বাজার থেকে খুচরা বাজারের দূরত্ব মাত্র ১০০ গজ। এতে খুচরা বাজারে প্রকারভেদে কেজিতে ৪-৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে দাম।
খুচরা বাজারে মিনিকেট চাল আগে যেখানে ৭০ টাকা ছিল তা এখন কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৭৫, আঠাশ বালাম ৫ টাকা বেড়ে ৬০- ৬৫, বুলেট ৫৫ - ৬০ টাকা। কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে স্বর্না বুলেট চিকন ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিবস্তা চাল তাদের ৫০-১০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে তাই দাম বাড়তি। প্রভাব পড়েছে বেচাকেনাতেও। এক বিক্রেতা জানান, মিনিকেট, আঠাশ, পাইজাম ও মোটা চাল সবগুলোর বস্তাপ্রতি দাম ১০০ টাকা করে বেড়েছে।
অন্যদিকে, চালের বাজার বাড়তি থাকায় নাকাল সাধারণ ক্রেতারা। রাস্তায় চাঁদাবাজি কমেছে, সরবরাহ রয়েছে তারপরেও কেন কমছে না চালের দাম বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
এক ক্রেতা জানান, আগে বস্তা হিসেবে কিনতাম। এখন ৫ কেজি ১০ কেজি কিনতেই কষ্ট হয়। আরেক ক্রেতা জানান, এখন কোনো চাঁদা দেয়া লাগে না, ভ্যাট দেয়া লাগেনা। তাহলে এখন কেনো চালের বাজার কমবে না।
বরিশাল ফড়িয়াপট্টি এলাকা ও বাজার রোডে চালের আড়ত রয়েছে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০টি। যেখান থেকেই বরিশালের বিভিন্ন জায়গার খুচরা পর্যায়ের বাজারগুলোতে চাল সরবরাহ করা হয়।