বরগুনা সদর ৮ নং ইউনিয়নের যুবক মিজানুর রহমান ঢাকার মানিকনগরে দিনমজুরের কাজ করতেন। ছোট ছোট দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে কোনোরকম দিন কাটতো তার।
মিজানুরের বাড়িতে বইছে এখন শোকের মাতম। গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরিবারের আয়ের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে পাগল প্রায় তার স্বজনরা। নির্বাক তাকিয়ে সন্তানদের চোখ আজও খুঁজে ফেরে মিজানুরকে।
মিজানুরের মা বলেন, 'আমার দুইটা নাতি আর ছেলের বউ কী খেয়ে থাকবে সেই দাবি জানাই আমি। সরকারের কাছে দাবি আমাদের পরিবারকে যেন ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়ে পরিবারকে যেন টিকিয়ে রাখে।'
মিজানুরের স্ত্রী বলেন, 'আমার কিছু লাগবে না। আমার এই ক্ষতি, আমার সন্তানদের যে ক্ষতি করেছে তাদের বিচার চাই।'
শুধু মিজানুন নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় নিহত আরও ছয়জনের বাড়ি বরগুনা জেলায়। নিহতরা সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ। কেউবা দিনমজুর, ভ্যানচালক কেউবা মোটর মেকানিকের কাজ করতেন ঢাকায়।
বরগুনার সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি মনির হোসেন কামাল বলেন, 'এই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের সহযোগিতা করা আর যে তাদের পরিবারের যারা বেঁচে আছে তারা যেন খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারে সে দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। জনপ্রতিনিধিদেরও তাদের দায়িত্ব নিতে হবে।'
অসহায় এ পরিবারগুলোর পাশে জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে না আসলেও প্রশাসনের তরফ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া কথা জানান জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, '২৫ হাজার টাকা করে আপাতত প্রাথমিকভাবে দিয়েছি। তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি যারা খেটে খাওয়া দিনমজুর আছেন, তাদের মধ্যেও আমরা বিভিন্ন খাবার বিতরণ করেছি। অনুদান দেওয়ার কাজ চলমান আছে।'
এদিকে, নিরীহ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের হত্যা বিচারসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা আর, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাঠে তৎপর প্রশাসন।