অপেক্ষায় কেটে যায় পাখির সময়, তবু দেখা মিলছে না খাবারের। প্রকৃতি জুড়ে নানাবিধ দূষণের নেতিবাচক প্রভাবে মরছে মাছ, কমছে জমির উর্বরতা, খাবার পাচ্ছে না পাখি। বরগুনার বুড়িরচর ইউনিয়নের ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মাটির ফাঁকেই রেকটিফায়ার, ট্রানজিস্টরসহ নানা ইলেকট্রনিক বর্জ্যের উপস্থিতি। যা বাড়াতে পারে দূষণের মাত্রা।
এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে বুড়িরচরে। তবে কৃষকরা বলছেন, মাটির উর্বরতা কমায় জমিতে দিতে হয়েছে বাড়তি সার।
ফসলি জমিতে কীটনাশক তো আছেই; সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পলিথিন ও ই-বর্জ্য। যা পরিবেশের জন্য নীরব ঘাতক। ইলেকট্রনিক ডিভাইসের বিভিন্ন ধাতব ও রাসায়নিক উপাদান মাটি ও পানির সঙ্গে মিশে ফসল উৎপাদন ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হয়ে উঠতে পারে আরও ক্ষতির কারণ।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি রসায়ন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে হেভি মেটাল দূষণ হচ্ছে এতে মাটির উর্বরতা কমেছে ও ভালো ফলন হচ্ছে না। তাই কৃষক মনে করছে, মাটিতে হয়ত নাইট্রোজেন অভাব রয়েছে, যে কারণে কৃষক অন্যের পরামর্শে রাসায়নিক সার ব্যবহার করছে। এতে একটি দূষণকে ঢাকতে গিয়ে আমরা আরেকটা দূষণ করছি। এই সারগুলো বেশি ব্যবহার করার কারণে আশেপাশের জলাশয়গুলোর পানিও দূষিত হবে।’
কৃষিতে ইলেকট্রনিক বর্জ্যের প্রভাব এড়াতে ও টেকসই খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিতে সচেতনতার পাশাপাশি পদক্ষেপের কথা জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
বরগুনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. আবু সৈয়দ মো. জোবায়েদুল আলম বলেন, ‘আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে কাজ করি। বিভিন্ন সময় তাদের সঙ্গে আমাদের সমন্বয় সভাসহ নানা সম্মিলিত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এর মাধ্যমে আমরা কৃষকদের ই- বর্জ্য বিষয়ে সচেতন করছি। এছাড়া আমাদের সাধারণ মানুষ যারা এ ধরনের পণ্য ব্যবহার করে তাদের এসব বর্জ্য জমিতে না ফেলার বিষয়েও আমরা সচেতনতা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছি।’
সচেতন মহল বলছে ই-বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।