স্বাস্থ্য
দেশে এখন
0

হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা সীমিত করায় ভোগান্তিতে রোগীরা

চলমান কারফিউ ও সাধারণ ছুটিতে দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা অনেকটা সীমিত। এসময় হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগ সেবা কোনোভাবে চললেও, জরুরি বিভাগেও বাড়ে রোগীর চাপ। এতে ভোগান্তি বাড়ে হাসপাতালের নিয়মিত রোগীদের। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, দীর্ঘ অপেক্ষায়ও মিলছে না চিকিৎসকের দেখা। তবে, কারফিউ শিথিলের সময় বাড়তে থাকায় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে চিকিৎসা সেবা।

জরুরি সেবা হিসেবে চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র খোলা থাকলেও, সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক না থাকায় রোগীর ভিড় ছিল না হাসপাতালে। জরুরি বিভাগ সার্বক্ষণিক চালু থাকলেও, বহির্বিভাগে সেবা চলে সীমিত আকারে। কোথাও ছিল পুরোপুরি বন্ধ।

সড়কের ভোগান্তি আর শঙ্কা নিয়ে ঢাকা মেডিকেলের বহির্বিভাগে সেবা নিতে এসেছেন অনেকে। রোগীর চাপ কম থাকায় সেবা প্রাপ্তিতে সন্তুষ্টি দেখা গেছে। তবে কণ্ঠে ছিল বাড়ি ফেরার তাড়া।

রোগীদের একজন বলেন, ‘পরিস্থিতি ভালো। গাড়ি চলছে দেখে ডাক্তার দেখাতে আসছি।’

গেল কিছুদিনের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি বিভাগে ছিল রোগীর বাড়তি চাপ। এসময়ে ভোগান্তি বাড়ে হাসপাতালের অন্য রোগীদের।

রোগীদের আরেকজন বলেন, ‘একটা টেস্ট দিয়েছিল যেটা শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে করানোর কথা ছিল পরিস্থিতি ভালো ছিল না দেখে করাতে পারিনি।’

এ নিয়ে, ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক বলছেন, হঠাৎ বাড়তি চাপে কিছুটা বেগ পেতে হয় তাদের। এ সময়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংকটাপন্ন রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, ‘রুটিন রোগী যারা ছিল তাদেরকে একটু পরে দেখা হয়েছে। অনেক জরুরি রোগী ছিল তাদের জীবন বাঁচাতে তাদেরকে আগে অগ্রাধিকার দিয়ে দেখানো হয়েছে।’

গেল কিছু দিনে বেসরকারি হাসপাতালে যেমন রোগী আসছে না বললেই চলে, তেমনি চিকিৎসকরা ব্যক্তিগত চেম্বারেও বসছেন না। সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ খোলা থাকলেও সড়কে নানা বাস্তবতায় চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়নি। এর প্রভাব পড়েছে সেবায়।

পরিচালক বলেন, ‘যেহেতু কারফিউ চলছিল, রাস্তায় গাড়ি না থাকায় রোগীর চাপ কম ছিল। আমাদের তো অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া তো সেইরকম ট্রান্সপোর্ট নেই। যার ফলে আমাদের আসা যাওয়ায় সমস্যা ছিল।’

তবে, কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ায় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুল কবির বলেন, ‘সরকারি বন্ধ থাকার দিনেও দূর থেকে যারা এসেছিল তাদেরকেও চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। আর এসব চিন্তা করেই আমাদের প্রতিদিনই আউটডোর খোলা রাখা ছিল।’

দেশের একমাত্র ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গত কয়েকদিনে কমেছে রোগীর উপস্থিতি।

জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ২ শতাধিক রোগী রেডিও থেরাপি নিয়ে থাকেন। যদিও হাসপাতালটি থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, গেল দুই দিনে ১৩৬ জন রোগী এ সেবা নিয়েছেন।

জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম নিজামুল হক বলেন, ‘আমাদের যতগুলো সেবা আছে সব মিলিয়ে ১২শ’ মতো রোগীর বিচরণ ঘটে এই হাসপাতালে। বর্তমান পরিস্থিতিতে চিকিৎসক ও রোগীদের আসতে অনেক সমস্যা হয়েছে।’

ক্যান্সার হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রেডিও ও কেমো থেরাপিসহ অন্যান্য সেবার সংকট দ্রুতই কাটিয়ে ওঠা যাবে।

ইএ