মধ্যরাতে একপ্রকার বৃষ্টি বন্ধ হলেও সকালের দিকে আবারও মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। নগরীর প্রায় সবক'টি এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ব্যবসা বাণিজ্যের এলাকা চালিবন্দর, তালতলাসহ বিভিন্ন জায়গায়ও স্থবির হয়ে পড়েছে।
শহরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, শিক্ষাভবন, সিনেমা হল ও পর্যটন হোটেলগুলোতে কোমর সমান পানিতে তলিয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, পাহাড়ি ঢলে সুরমা ও সারি-গোয়াইন নদীর পানি এখন বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলে শুধু গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জেই লাখের বেশি মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এমন বৃষ্টি ও উজানের ঢল অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে।
টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের পানির ঢলে সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও প্লাবিত ১৩ টি উপজেলায় পানিবন্দি প্রায় ৬ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত বৃষ্টিতে বাসা বাড়ি , প্রধান সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগের শেষ নেই মানুষের। সম্প্রতি বন্যা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এমন দুর্ভোগে নাজেহাল সিলেটের মানুষ।
এছাড়া উপজেলা প্রশাসন ক্রাউসিস টিম চালু করলেও নৌকার সংকটে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করতে সমস্যা হচ্ছে। জেলাজুড়ে ৬২৭ টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রস্তুত হলেও বন্যাকবলিতদের বেশিরভাগই আশ্রয়কেন্দ্রে উঠতে পারে নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ সুরমা বড়ইকান্দি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র রক্ষায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ জুন) ওই বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিলেট সিটি করপোরেশনের অনুরোধে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এর নির্দেশনায় 'ইন এইড টু দি সিভিল পাওয়ার' এর আওতায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এই বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র থেকে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন, সিলেট শহরের পার্শ্ববর্তী বরইকান্দি, কামালবাজার, মাসুকগঞ্জ, বিসিক, লালাবাজার, শিববাড়ী ও কদমতলীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসহ সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এসকল এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সেনাসদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে বলে আইএসপিআর এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।