আজ (শুক্রবার, ১০ মে) নদী রক্ষার আন্দোলনের অংশ হিসেবে সাম্পান বাইচের আয়োজন করা হয়। কারণ অর্থনৈতিকভাবে এ নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। দেশের আমদানি-রপ্তানির ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে, যা কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত। অথচ ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণখ্যাত এই নদী আজ দখল-দূষণে বিপর্যস্ত।
ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি আলিউর রহমান বলেন, ‘সাম্পান মাঝিদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে তাদেরকে ঘাট ফিরিয়ে দিতে হবে। সে কারণে তাদেরকে সংশ্লিষ্ট করে ১৮ বছর ধরে সামাজিক আন্দোলন করে যাচ্ছি।’
২০১৭ সালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এক গবেষণায় দেখা যায়, কর্ণফুলীতে দৈনিক ৭৮৫ টন বর্জ্য মিশছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৪০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য। এই দূষণ ছাড়াও নদীর পাড় দখল করে গড়ে উঠছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এতে সংকুচিত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র এই নদী।
জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘এই নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। নদীর দূষণ প্রতিরোধ ও অবৈধ দখল থেকে মুক্ত রাখতে প্রশাসন সবার পাশে আছে। জনসাধারণ যেন আমাদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করে।’
এ নদীতে সাম্পান বেয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন এক হাজার মাঝি। তাদের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহল ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে। এমনটা চললে বংশ পরম্পরায় যারা প্রকৃত সাম্পান মাঝি তারা এ পেশা থেকে সরে যেতে বাধ্য হবে।
বাংলা বাজারঘাট সাম্পান-টেম্পু মালিক সমিতির সভাপতি লোকমান দয়াল বলেন, ‘সাম্পানে যাত্রী পারাপার করে মাঝিরা জীবিকা নির্বাহ করে। শক্তিশালীরা যদি ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলে তাহলে মাঝিরা কোথায় যাবে? তাহলে পেশা ও ঐতিহ্য সবকিছু হারাবে।’
এদিন সাম্পান বাইচের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী চাঁটগাইয়া মেলা অনুষ্ঠিত হয়।