নতুন বাংলাদেশে আগামীর বিকশিত অর্থনীতি কেমন হবে?– এ ব্যাপারে শিল্প ও বাণিজ্য খাতের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাই বা কী? তা তুলে ধরতে চট্টগ্রামে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে আইসিএমএবি।
সভায় ব্যবসায়ীরা এ বছর সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া আর্থিক সেক্টরে লুটপাট, দুর্নীতির বিচার ও কার্যকর সংস্কার নিয়েও চলে আলোচনা।
সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান জানান, বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা দেশের কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন, তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আগামীতে যথাসম্ভব ভ্যাট ট্যাক্স কমিয়ে আনবে। এছাড়া রাজস্ব দিতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন, এজন্য আগামী বছরের মধ্যে পুরো ব্যবস্থা অনলাইনে নিয়ে আসা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'এখন আমরা টোটাল অটোমেটিক সিস্টেমে চলে আসছি। আরো বাকি যে অটোমেশনগুলো করা দরকার, সেগুলো আমরা করে ফেলবো।'
এ সময় দুই হাজার কোটি টাকা সম্পদমূল্যের কারখানাকে সরকার কী করে ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিলো?
সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলে বাণিজ্য সচিব সেলিম উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশে প্রাইভেট সেক্টরে ২০০ থেকে ২৫০ রকমের দুর্নীতি হয়। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক সংস্কারের চেয়ে অর্থনৈতিক সংস্কারই প্রধান চ্যালেঞ্জ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানান, জুলাই চেতনা ও ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা পূরণে দেশের সব শিল্পখাতের সংস্কার করা হবে। তবে এই অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার সহজ করতে ব্যবসায়ীদের ৫০ শতাংশ ভ্যাট ট্যাক্স বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগে (এফডিআই) চ্যালেঞ্জ আছে। আমাদের কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হবে। দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত নই, কারণ আমাদের শিল্পে উচ্চ শুল্কমূল্য রয়েছে।’
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘ভ্যাট ফাঁকি দিলে, ট্যাক্স দেয়া যায় না। কারণ একমাত্র সেলস কম দেখানোর মাধ্যমে ভ্যাট ফাঁকি দিতে হয়। আমাদের যেমন জনগণ ও সরকারের মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক দরকার, তেমনি অর্থনীতিতে ভ্যাট ও ট্যাক্সের মধ্যে সম্পর্ক দরকার। ইন্ডাস্ট্রি রাজস্ব বিভাগের সাথে সমন্বয় করা প্রয়োজন ট্যাক্সের বিষয়ে। কালেক্টিং বডি হিসেবে আপনারা বলেন যে ৫০ শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে দিবো। এটা সম্ভব।’
আগামী বছর দেশে মূল্যস্ফীতি কাটিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলেও এ সময় আশা প্রকাশ করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।