পঞ্চগড় জেলা শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরেই করতোয়ার তীরে গড়ে উঠে মীরগড় মালিপাড়া। আগে এই পাড়ার ৫০ থেকে ৬০ ঘরে ছিল কুমারদের বাস। তবে এখানে সময়ের সাথে কমেছে কুমারদের সংখ্যা, এখন মৃৎশিল্প ধরে রেখেছেন মাত্র ৮ থেকে ১০টি পরিবার।
আগে বৈশাখ এলে শিশুদের খেলনাসহ মাটির জিনিসপত্র তৈরির ধুম পড়তো এখানকার কুমারপাড়ায়। বিভিন্ন উৎসবে তখন একজন কুমারের আয় ছিল ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। তবে এখনের চিত্রটা একটু ভিন্ন, উৎসব কিংবা পূজা-পার্বণে আয় হচ্ছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এতে উঠছে না খরচের টাকাও। ফলে প্লাস্টিক, মেলামাইনের মতো আধুনিক পণ্যের কাছে অনেকটা হার মেনেই পেশা ছেড়েছেন অনেকে।
কুমার ও ব্যবসায়ীরা বলেন, 'আমরা দইয়ের হাড়ি-পাতিল তৈরির পর রং করে বাজারে বিক্রি করি। কিন্তু আগের মতো এটা চলে না। এ শিল্পটা একদম শেষ হওয়ার পথে। এখন আর মানুষ আগের মতো কিনে না। দইয়ের বাটি ছাড়া অন্যগুলো আর চলে না। সংসার চালাতে কষ্ট হয় আমাদের।'
মৃৎ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে এটির আধুনিকায়নের ওপর জোর দেয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন- বিসিক। এজন্য প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন উপ-ব্যবস্থাপক জুয়েল চন্দ্র সেন।
তিনি বলেন, 'প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মৃৎশিল্পের পণ্যগুলোকে আধুনিকায়ন করতে পারলেই এটাকে রক্ষা করতে পারবো। বিসিক থেকে আমরা প্রশিক্ষণ এবং ঋণ প্রদান করে থাকি।'
যুগ যুগ ধরে যে শিল্প বাংলার লোকসংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে সেই শিল্প এখন সংকটে। সরকারি তদারকির অভাবে হয়তো একদিন হারিয়ে যাবে এই শিল্প। এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।