ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী চুন শিল্পে এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। মেশিন ব্যবহারে উৎপাদন সহজ হলেও কাঁচামালের সংকট ও কাঙ্ক্ষিত লাভ না পাওয়ায় অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে এ শিল্প। তবে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বিসিক।
দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী জেলা ঝালকাঠি। একসময় এখানকার চুনের কদর ছিল দেশজুড়ে। পালবাড়ি ও বাউকাঠি এলাকার ১০টি কারখানায় শতাধিক পরিবার চুন তৈরির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল। কিন্তু জলাশয় কমে যাওয়া আর শামুক-ঝিনুকের উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় আজ টিকে আছে মাত্র দুটি কারখানা।
শামুক ও ঝিনুক দিনরাত আগুনে পুড়িয়ে, ঘানিতে গুঁড়া করে পানি মিশিয়ে তৈরি করা হতো চুন। এছাড়া সনাতন পদ্ধতিতে চুন তৈরিতে সময় লাগত ১০ দিন। কাঁচামাল সংকট ও চাহিদা কমে যাওয়ায় চুন উৎপাদনে লাভের পরিমাণ কমে গেছে বলে জানান চুন শিল্পীরা।
এখন বিদ্যুৎচালিত মেশিনে দ্রুতগতিতে চুন তৈরির কাজ হচ্ছে। এ শিল্পে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের। তবে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় নতুন সংকটের মুখে পড়ছেন কারিগররা।
অন্যান্য ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের মতো চুন শিল্পের সাথে জড়িত কারিগরদের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় বিসিক কর্মকর্তা।
ঝালকাঠি বিসিক উপ-ব্যবস্থাপক আলী আজগর নাসির বলেন, ‘বাজারে চুনের একটা চাহিদা থাকার কারণে চুন তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে বিসিক অন্যান্য উদ্যোক্তাদের মতো যেকোনো ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তাকে সাহায্য ও পরামর্শ দিয়ে আসছি।’
সময়ের সঙ্গে পাল্টে যাওয়া এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন কাঁচামালের জোগান ও সহজ শর্তে ঋণ। সেইসাথে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। তবেই নতুন করে প্রাণ ফিরে পাবে ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী চুন শিল্প, এমন দাবি সংশ্লিষ্টদের।