দেশে এখন
0

যশোর পর্যন্ত পদ্মা রেল প্রকল্পের ৯৫ ভাগ শেষ, জুলাইয়ে উদ্বোধন

দেশের প্রথম উড়াল রেলস্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় শতভাগ। এখন ভাঙ্গার আইকনিক স্টেশনও দৃশ্যমান। সবমিলিয়ে যশোর পর্যন্ত পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ প্রায় ৯৫ শতাংশ শেষ। যার চূড়ান্ত সক্ষমতা পরীক্ষা মে মাসে, আর জুলাইয়ে উদ্বোধন হবে।

একদিকে উত্তপ্ত ঢালাইয়ে যুক্ত হচ্ছে লোহার পাত, অন্যদিকে সেটিকে করা হচ্ছে মসৃণ আর চকচকে। সূর্যের চোখ রাঙানি আর প্রকৃতির বৈরিতা দেখার সময় কোথায়? যেখানে দায়িত্বে অনড় নির্মাণশিল্পীরা। তাদের হাত দিয়েই তৈরি হচ্ছে দেশের সবচেয়ে অত্যাধুনিক রেলস্টেশন।

সাড়ে ৬ হাজার বর্গকিলোমিটারের স্টেশন ভবন এখন দৃশ্যমান। এর অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা আর নকশা এটিকে আইকনিক করছে। এই জংশন স্টেশন থেকে একটি লাইন রাজবাড়ী-ভাঙ্গা রুটে যাবে। অন্যটি যশোরের রুপদিয়ায়। অদূর ভবিষ্যতে এখান থেকেই রেল যাবে কুয়াকাটায়।

পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের আরেক সংযোজন দেশের প্রথম উড়াল রেলস্টেশন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই স্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় শতভাগ।

দেশের সব রেলপথের মতো এ রেললাইনের নিচে স্লিপার রয়েছে। তবে সেটি ১০০ বছর স্থায়ী কংক্রিটের। এ পথে পাথর না থাকায় এবং স্লিপার ভায়াডাক্টের সাথে যুক্ত থাকায় রেললাইন বেঁকে কিংবা সরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাতে এ পথে যেমন রক্ষণাবেক্ষণ ব্যায় কমেছে তেমন যাত্রীদের ভ্রমণ আনন্দও বেড়েছে।

কেরানীগঞ্জে অবস্থিত রেলস্টেশনটির আধা কিলোমিটারের মধ্যে নির্মিত হচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস। এটিকে ঘিরে আশেপাশে তৈরি হচ্ছে নানা আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রকল্প। ভবিষ্যতে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনালের সাথে যুক্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে কর্তৃপক্ষের।

ব্রিজ ও ভায়াডাক্ট ইঞ্জিনিয়ার, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকৌশলী (ব্রিজ ও ভায়াডাক্ট) শশাংক বিশ্বাস বলেন, ভায়াডাক্টের ব্যালাসলেস ট্র্যাক নির্মাণের জন্য জিআরপি মেশিন ব্যবহার করেছি। এর মাধ্যমে রেলের এলাইনমেন্ট, সুপার এলিভেশন এবং বিভিন্ন কার্প সেটিং করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, এটি ১০০ বছর স্থায়ী হবে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিএসসি ইনচার্জ মো. আমিনুল করিম বলেন, গ্রাউন্ড লেভেল থেকে প্রায় ৯ মিটার উপরে নির্মিত স্টেশনে আধুনিক সব ধরনের সুবিধা রয়েছে। ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত মোট ১৭ কিলোমিটার এলিভেটেড অংশ।

এই দুই স্টেশনসহ মোট ১৪টি নতুন স্টেশন করা হয়েছে ১৭২ কিলোমিটার পথজুড়ে। পুরাতন ৬টি স্টেশন সংস্কার, মেজর ব্রিজ নির্মাণসহ ইতোমধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৯৫ শতাংশ।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘ঢাকা-গেন্ডারিয়ার মধ্যে তিনটি লাইনের মধ্যে দুটি লাইনের কাজ শেষের দিকে। আরেকটি লাইনের কাজ চলমান আছে। এ প্রকল্পের প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ।’

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘৪ ঘণ্টার মধ্যেই বেনাপোল পৌঁছানো সম্ভব হবে। সবমিলিয়ে এ পথে দূরত্ব অনেক কমে আসবে। প্রধানমন্ত্রী সময় দিলেই আমরা জুলাইয়ের যেকোন সময় এই রুট খুলে দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।’

পুরোপুরি চালু হলে এ পথে যশোর কিংবা খুলনা যেতে পথের দূরত্ব ১৯০ থেকে ২১২ কিলোমিটার পর্যন্ত কমে যাবে।