জেলা সদরের ধনঞ্জয় গ্রামের আদিবাস নামক স্থান থেকে এক কিলোমিটার জুড়ে সড়কের দু'পাশে দেখা মেলে খেজুর গাছের। রাতভর এসব গাছ থেকে জমা রস ভোর হতেই সংগ্রহে ব্যস্ততা বাড়ে গাছিদের।
তরল রস থেকে গুড়ে রূপান্তর ও বিভিন্ন আকৃতিতে সেগুলোকে ক্রেতার কাছে উপস্থাপনের প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ ও কষ্টসাধ্য।
আগে এ এলাকায় খেজুরের গুড় তৈরি না হলেও এখন রাজশাহীর বাঘা থেকে আসেন গাছিরা। এমনই দুজন গাছি আলম হোসেন ও কুদ্দুস আলী। তারা গাছ প্রতি এক কেজি করে গুড় দেয়ার চুক্তিতে একশ' গাছ সাময়িক ইজারা নিয়ে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করছেন। একদিন বাদ দিয়ে ৫০টি গাছ থেকে দৈনিক ১০০ থেকে ১২০ লিটার রস সংগ্রহ করছেন তারা।
তারা বলেন, 'গাছগুলো রসের জন্য প্রস্তুত করতে প্রায় ২০ দিনের মত সময় লেগেছিল। আমরা এসব গাছ চুক্তিতে নিয়েছি। ৫০টি গাছ থেকে ১৪-১৫ কেজি গুড় হয়।'
এখানকার গুড়ের মান ভালো হওয়ায় পাটালির চাহিদাও বেশ। প্রতি কেজি গুড়ের দাম মিলছে ৩০০ টাকা। লাভজনক এবং আয়ের নতুন পথ হওয়ায় গাছের পরিচর্যা, রস সংগ্রহ এবং গুড় তৈরির কৌশল শিখছেন স্থানীয়রাও।
এলাকাবাসী জানান, গুড়ের স্বাদ বেশ ভালো। অনেকের গুড় তৈরিতে আগ্রহ বাড়ছে। তাই তারাও শেখার চেষ্টা করছেন।
খেজুর গুড় তৈরিতে এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনীতি গতি পাওয়ায় গ্রামীণ সড়কগুলোর দু'পাশে খেজুর গাছ লাগাতে স্থানীয়দের উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ।
উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, 'খেজুর গাছ রোপনের কর্মসূচি গ্রহণ করছি। এই গুড় আমাদের চাহিদা মিটিয়েও বাইরের জেলাতেও দিতে পারছি। এটা সম্প্রসারণ করা আমাদের জন্য সহজ হবে।'
এখানে দৈনিক গুড় উৎপাদন হচ্ছে ১৪ থেকে ১৬ কেজি। গাছিরা বলছেন, এলাকার সব গাছ থেকে রস আহরণ সম্ভব হলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্য জায়গাতেও গুড় সরবরাহ সম্ভব।