নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনিক সুবিধার্থে এই বিতরণ প্রক্রিয়া এলাকার ভিত্তিতে ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন, উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিস থেকে কার্ড বিতরণের নির্দিষ্ট তারিখ ও স্থান জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
এসএমএসে স্মার্ট কার্ডের স্ট্যাটাস চেক (How to Check Smart NID Status via SMS)
নাগরিকরা এখন ঘরে বসেই জানতে পারবেন তাদের স্মার্ট এনআইডি কার্ডটি তৈরি হয়েছে কি না বা কোথায় পাওয়া যাবে। এর জন্য নিচের সহজ পদ্ধতিটি অনুসরণ করতে হবে:
SMS ফরম্যাট: মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখুন— SC <স্পেস> NID Number (১৭ সংখ্যার এনআইডি নম্বর)।আপনার মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে বড় হাতের অক্ষরে লিখুন: SC <স্পেস> NID <স্পেস> আপনার ১৭ সংখ্যার এনআইডি নম্বর। উদাহরণ: SC NID 19901234567890123
পাঠিয়ে দিন ১০৫ নম্বরে: মেসেজটি লিখা হয়ে গেলে নির্বাচন কমিশনের শর্টকোড ১০৫ নম্বরে পাঠিয়ে দিন। ফিরতি এসএমএসে আপনি আপনার কার্ডের বর্তমান অবস্থা এবং সংগ্রহের স্থান জানতে পারবেন।
সতর্কতা: যাদের এনআইডি নম্বর ১৩ সংখ্যার, তারা নম্বরের শুরুতে নিজের জন্মসাল যোগ করে ১৭ সংখ্যা পূর্ণ করবেন।
আরও পড়ুন:
অনলাইনে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড (NID Online Copy Download)
স্মার্ট কার্ড হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত নাগরিকরা নির্বাচন কমিশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে এনআইডির অনলাইন কপি (PDF) সংগ্রহ করতে পারবেন। অনেক ক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজনে এই অনলাইন কপিটি সাময়িক ব্যবহারের জন্য বেশ কার্যকর।
স্মার্ট এনআইডি কার্ড কোথায় পাবেন? (Where to Collect Smart NID)
নির্ধারিত সময় ও সূচি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিম্নলিখিত কেন্দ্রগুলো থেকে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে:
১. সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ।
২. উপজেলা নির্বাচন অফিস।
৩. নির্ধারিত অস্থায়ী বিতরণ কেন্দ্র।
আরও পড়ুন:
সতর্কবার্তা ও সচেতনতা
নির্বাচন কমিশন নাগরিকদের গুজব ও ভুয়া তথ্য থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। স্মার্ট কার্ড সংক্রান্ত যে কোনো তথ্যের জন্য শুধুমাত্র অফিশিয়াল ওয়েবসাইট বা ১০৫ নম্বরে কল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালে এই কার্যক্রম পুনরায় চালু হওয়ায় দীর্ঘদিন অপেক্ষমাণ কয়েক লাখ নাগরিক সরাসরি উপকৃত হবেন।
স্মার্ট এনআইডি কার্ড সংগ্রহের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা
১. পুরানো এনআইডি কার্ড (Old NID Card): যাদের কাছে ইতিমধ্যে কাগজের লেমিনেটিং করা এনআইডি কার্ড আছে, তাদের অবশ্যই সেটি জমা দিতে হবে। পুরানো কার্ড জমা না দিলে স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হয় না।
২. ভোটার নিবন্ধন স্লিপ (Voter Registration Slip): যারা নতুন ভোটার হয়েছেন কিন্তু এখনও কোনো কার্ড পাননি, তাদের ভোটার হওয়ার সময় দেওয়া মূল 'নিবন্ধন স্লিপ' বা 'ফরম-৫ এর রসিদ' সাথে নিতে হবে।
আরও পড়ুন:
৩. অনলাইন কপির প্রিন্ট (NID Online Copy): যদি আপনার কাছে স্লিপ বা পুরানো কার্ড না থাকে, তবে অনলাইন থেকে ডাউনলোড করা এনআইডি কপির একটি রঙিন বা সাদা-কালো প্রিন্ট কপি সাথে রাখা নিরাপদ।
৪. হারানো কার্ডের ক্ষেত্রে জিডি কপি ও পে-অর্ডার (GD Copy for Lost NID): যদি আপনার পুরানো এনআইডি কার্ডটি হারিয়ে গিয়ে থাকে, তবে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট থানায় করা জিডির (General Diary) মূল কপি এবং কার্ড পুনঃউত্তোলনের জন্য নির্ধারিত ফি জমা দেওয়ার চালান বা পে-অর্ডার কপি দেখাতে হবে।
৫. সশরীরে উপস্থিতি (Physical Presence): স্মার্ট কার্ড গ্রহণের সময় নাগরিকের হাতের দশ আঙুলের ছাপ (Fingerprint) এবং চোখের মণির (Iris Scan) বায়োমেট্রিক তথ্য পুনরায় নেওয়া হয়। তাই কার্ড নিতে ব্যক্তিকে সশরীরে উপস্থিত হতে হবে।
আরও পড়ুন:
জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড হারিয়ে গেলে পুনরায় তা সংগ্রহের জন্য সরকার নির্ধারিত নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হয়। কার্ডটি কতবার হারিয়েছেন তার ওপর ভিত্তি করে এই ফি ভিন্ন হয়ে থাকে। নিচে ২০২৫-২৬ সালের সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী হারানো এনআইডি কার্ড পুনঃউত্তোলনের ফি এবং জমা দেওয়ার পদ্ধতি দেওয়া হলো:
হারানো এনআইডি কার্ড পুনঃউত্তোলনের ফি (NID Reissue Fees)
আবেদনের ধরন আবেদনের ফি (সাধারণ) আবেদনের ফি (জরুরি) প্রথমবার হারানো ২০০ টাকা (ভ্যাটসহ ২৩০ টাকা) ৩০০ টাকা (ভ্যাটসহ ৩৪৫ টাকা) দ্বিতীয়বার হারানো ৩০০ টাকা (ভ্যাটসহ ৩৪৫ টাকা) ৫০০ টাকা (ভ্যাটসহ ৫৭৫ টাকা) পরবর্তী যেকোনো বার ৫০০ টাকা (ভ্যাটসহ ৫৭৫ টাকা) ১০০০ টাকা (ভ্যাটসহ ১১৫০ টাকা)
নোট: প্রতিটি ফির সঙ্গে ১৫% ভ্যাট যুক্ত থাকে। ফি জমা দেওয়ার সময় মোট টাকার পরিমাণ উপরে উল্লেখিত ভ্যাটসহ পরিমাণটি হবে।
আরও পড়ুন:
ফি জমা দেওয়ার পদ্ধতি (Payment Method)
আপনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে খুব সহজেই এই ফি পরিশোধ করতে পারেন:
বিকাশ (bKash): 'Pay Bill' অপশন থেকে 'NID Service' সিলেক্ট করে ফি জমা দিতে পারেন।
রকেট (Rocket): বিলার আইডি হিসেবে ১০৫ ব্যবহার করে পেমেন্ট করা যায়।
নগদ (Nagad): সরকারি ফি প্রদান অপশন থেকে এনআইডি রি-ইস্যু ফি দেওয়া যায়।
সোনালী ব্যাংক: সোনালী সেবা বা সরাসরি ব্যাংকে গিয়েও জমা দেওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন:
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
১. থানায় করা জিডির (General Diary) মূল কপি।
২. ফি জমা দেওয়ার অনলাইন রসিদ বা স্লিপ।
৩. স্মার্ট কার্ডের জন্য হলে সশরীরে উপস্থিত হয়ে বায়োমেট্রিক প্রদান।
স্মার্ট এনআইডি কার্ড বিতরণ ও স্ট্যাটাস চেক সংক্রন্ত প্রয়োজনীয় প্রশ্নোত্তর-FAQ
প্রশ্ন: স্মার্ট এনআইডি কার্ড বিতরণ কি আবার শুরু হয়েছে?
উত্তর: হ্যাঁ, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে ২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধাপে ধাপে স্মার্ট এনআইডি কার্ড বিতরণ কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে।
প্রশ্ন: আমি কি আমার স্মার্ট কার্ডের অবস্থা ঘরে বসে জানতে পারব?
উত্তর: অবশ্যই। মোবাইল থেকে ১০৫ নম্বরে একটি এসএমএস পাঠিয়ে আপনি সহজেই আপনার কার্ডের বর্তমান অবস্থা বা স্ট্যাটাস জানতে পারবেন।
প্রশ্ন: এসএমএসের মাধ্যমে স্ট্যাটাস চেক করার ফরম্যাটটি কী?
উত্তর: মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখুন: SC <স্পেস> NID <স্পেস> আপনার ১৭ সংখ্যার এনআইডি নম্বর এবং পাঠিয়ে দিন ১০৫ নম্বরে।
প্রশ্ন: আমার এনআইডি নম্বর ১৩ সংখ্যার, আমি কীভাবে এসএমএস করব?
উত্তর: আপনার এনআইডি নম্বর ১৩ সংখ্যার হলে, ওই নম্বরের শুরুতে আপনার জন্মসাল যোগ করে ১৭ সংখ্যা পূর্ণ করে তারপর এসএমএস পাঠান।
প্রশ্ন: নতুন ভোটাররা কি এখন স্মার্ট কার্ড পাবেন?
উত্তর: হ্যাঁ, নতুন ভোটার এবং যারা আগে ভোটার হয়েও স্মার্ট কার্ড পাননি, তাদের পর্যায়ক্রমে এই বিতরণের আওতায় আনা হচ্ছে।
প্রশ্ন: স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে কোথায় যেতে হবে?
উত্তর: সাধারণত নিজ নিজ এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিস অথবা নির্ধারিত অস্থায়ী বিতরণ কেন্দ্র থেকে কার্ড সংগ্রহ করতে হয়।
প্রশ্ন: স্মার্ট কার্ড নিতে গেলে কি টাকা লাগে?
উত্তর: প্রথমবার স্মার্ট কার্ড সংগ্রহের জন্য কোনো ফি বা টাকা লাগে না। তবে কার্ড হারিয়ে গেলে বা সংশোধন করতে হলে নির্ধারিত ফি দিতে হয়।
প্রশ্ন: স্মার্ট কার্ড নিতে কী কী কাগজপত্র সাথে নিতে হবে?
উত্তর: পুরাতন লেমিনেটিং করা এনআইডি কার্ড অথবা ভোটার নিবন্ধনের মূল স্লিপ অবশ্যই সাথে নিতে হবে।
প্রশ্ন: স্মার্ট কার্ড নিতে কি নিজেকে উপস্থিত থাকতে হবে? উত্তর: হ্যাঁ। কার্ড দেওয়ার সময় চোখের মণির ছাপ (Iris Scan) এবং দশ আঙুলের ছাপ (Fingerprint) নেওয়া হয়, তাই কার্ড গ্রহীতাকে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে।
প্রশ্ন: এসএমএস পাঠানোর পর যদি কোনো রিপ্লাই না আসে তবে কী করব?
উত্তর: মাঝে মাঝে সার্ভার জ্যামের কারণে দেরি হতে পারে। তবে সমাধান না পেলে আপনি নির্বাচন কমিশনের হেল্পলাইন নম্বর ১০৫-এ সরাসরি কল করতে পারেন।
প্রশ্ন: অনলাইনে কি স্মার্ট কার্ডের কপি পাওয়া যায়?
উত্তর: নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে এনআইডির অনলাইন কপি (PDF) ডাউনলোড করা যায়। তবে মূল চিপযুক্ত স্মার্ট কার্ডটি সরাসরি অফিস থেকেই সংগ্রহ করতে হবে।
প্রশ্ন: আমার এলাকায় স্মার্ট কার্ড কবে দিবে তা কীভাবে জানব?
উত্তর: স্থানীয় নির্বাচন অফিসের নোটিশ বোর্ড, সোশ্যাল মিডিয়া অথবা ১০৫ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে আপনি আপনার এলাকার বিতরণের সময়সূচি জানতে পারেন।
প্রশ্ন: পুরাতন আইডি কার্ড হারিয়ে ফেললে কি স্মার্ট কার্ড পাব?
উত্তর: হ্যাঁ পাবেন। তবে সেক্ষেত্রে থানায় জিডি (GD) করে সেই জিডি কপি এবং নির্ধারিত ফি জমা দেওয়ার রসিদ নিয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
প্রশ্ন: স্মার্ট কার্ডের সুবিধা কী কী?
উত্তর: স্মার্ট কার্ডে ২৫টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা জাল করা অসম্ভব। এটি পাসপোর্ট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা এবং সরকারি অন্যান্য সুবিধা পেতে অধিক নির্ভরযোগ্য।
প্রশ্ন: এনআইডি অনলাইন কপি কি স্মার্ট কার্ডের বিকল্প হিসেবে কাজ করে?
উত্তর: অনলাইন কপি দিয়ে বেশিরভাগ জরুরি কাজ চালানো যায়, তবে গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল কাজে মূল স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক হতে পারে।
আরও পড়ুন:





