আজ (মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জিয়া পরিবারকে নিয়ে এসব কথা লিখেছেন সাবেক এ ফুটবলার।
আমিনুল হকের পুরো ফেসবুক পোস্ট—
বয়স যখন তার ছয়, তখন ছিলেন মায়ের সঙ্গে ঢাকায় গৃহবন্দি। প্রথমে মৃত্যু থেকে পালাতে ছুটোছুটি, এরপর তাদের কব্জায় পড়লে যেকোনো সময় তাদের মেরে ফেলা হতে পারে ভয়ে কেটেছে মুক্তিযুদ্ধের নয়টা মাস।
বয়স যখন তার এগারো, আবারও হলেন গৃহবন্দী। সিপাহি জনতার বিদ্রোহের তিন দিন। এবার বাবা-মায়ের সঙ্গে। তিনদিনের সেই ভয়াল সময়ে দিন গুনছিলেন কখন পুরো পরিবারসহ তাদের জীবনাবসান ঘটবে।
বয়স যখন পনেরো। হারালেন তার বাবাকে। হয়ে গেলেন এতিম। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো।
বয়স যখন তার কুড়ি পার হচ্ছে। বারবার নিজের চোখের সামনে দেখছিলেন দুই ভাইকে রেখে কীভাবে তার মা রাজপথে আর জেলখানায় কাটিয়ে দিচ্ছে লড়তে লড়তে।
বয়স চল্লিশ পার হলো তখন। এবার দেখলেন আরও কঠিন অবস্থা। নিজের ভাই, মাসহ পুরো ফ্যামিলি কারারুদ্ধ। নিজের মাজার হাড় ভেঙে দিয়েছে। ভাইকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঢেলে দিচ্ছে। ওদিকে মা কেও জেলে বন্দি করে রাখছে।
আরও পড়ুন:
জেল থেকে বের হয়ে নিজে গেলেন লন্ডন, ভাই গেলো মালয়েশিয়া। নিজে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হলেন কিন্তু ভাই হলো না। বাবা ছাড়া ফ্যামিলিতে ছোটো ভাইবোনদের বাবা হিসেবে গণ্য করা হয় ‘বড় ভাই’ কে। কিন্তু ছোটো ভাইয়ের মৃত্যু হলো। জানাজা হলো। দাফন হলো। শুধু দূর থেকে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারলেন না।
বয়স তার যখন পঞ্চাশ হলো। বৃদ্ধ, অসুস্থ মা কে দেখলেন পরিত্যক্ত এক ভুতুড়ে কারাগারে যেতে। যেখানে একমাত্র বন্দি হিসেবে ছিলো তার মা। কাটিয়েছেন দিনের পর দিন। মৃত্যুর সঙ্গে লড়েছেন।
এরপর মা বের হলো। কিন্তু তাকে নিতে দিলো না বেঁচে থাকা একমাত্র সন্তানের কাছে। তার বয়স ষাটোর্ধ্ব হবে হবে তখন আসলো আল্লাহর রহমত, জুলাই আসলো। সময়ের পরিক্রমায় তাকে নিয়ে গেলেন বড় ছেলে, একসঙ্গে কিছুদিন কাটালেন। এরপর দেশে পাঠালেন।
আরও পড়ুন:
এখন নিজেও আসলেন, কিন্তু আসার এক সপ্তাহ না হতেই বিদায় নিলেন তার মমতাময়ী মা।
বাবা গেলো, ছোটো ভাই গেলো, এখন গেলো মা ও... এই দুনিয়ার তার আপন বলতে আর কেউ রইলো না।
জীবন তারেক রহমানকে কী দিয়েছে? যা দিয়েছে তার চেয়ে হাজারগুণ বেশি নিয়েছে। হাজার-সহস্র বেশিগুণ...





