ঐক্যবদ্ধ বার্তার স্লোগানগুলো ছিল গণঅভ্যুত্থানে তরুণদের শক্তি। যাদের নেতৃত্বে পরবর্তীতে পতন হয় স্বৈরাচারের। আগামীর রাজনীতিতে এই তরুণদের অংশীদারিত্ব কোথায়? বিশেষ করে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে তরুণদের নিয়ে বিএনপি কি ভাবছে?
ছাত্র নেতাদের চাওয়া, নতুন ধারার রাজনীতির সূচনা হোক দলের সিনিয়র নেতাদের থেকে। তরুণ ভোটারদের মতামতকে গুরুত্ব বিবেচনায় হোক নেতৃত্ব নির্বাচন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা যেন রাষ্ট্রকে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে পারি। একজন ব্যক্তি ৫ বছর রাজনীতি করবে আর ৫ বছর সে জেলে কাটাবে এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সুতরাং ওই রাজনীতির সূচনা আমাদের যে সিনিয়র বা অভিজ্ঞ আছেন তাদের সূচনা করতে হবে, আমরা তাদের পাশে ঢাল হয়ে থাকবো।’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘গত তিনটি যে জাতীয় নির্বাচন সেখানে তরুণরা কিন্তু কোনোভাবে তাদের মতামত প্রতিষ্ঠা করতে পারে নি। সুতরাং এবার যেহেতু সুযোগ হয়েছে নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ করার, তরুণরা ভোট দিবে। সুতরাং তরুণদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে দল নেতৃত্ব নির্বাচন করবে এটাই আমরা জানতে পেরেছি।’
২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের আগে গত দেড়যুগ ধরে নানা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা বিএনপির সম্মুখসারির তরুণ যোদ্ধা ছিল। তাদের অনেকেই এখন পরিপক্ব। আসন্ন ভোট যুদ্ধে তাদের অবস্থান কি হবে?
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছি। এখন পর্যন্ত গণতন্ত্র পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় নি। আমার এই তরুণ ভোটারদের সাথে নিয়ে আমরা আগামীতে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু বলেন, ‘প্রবীণদের পাশাপাশি যারা নতুন নেতৃত্ব, নবীন তাদেরকে সাথে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের প্রত্যাশা।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু বলেন, আমাদের আল্লাহ যদি কাজের সুযোগ দেয়, সে অনুযায়ী মানুষের প্রত্যাশা পূরণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
বিএনপির অভিজ্ঞ নেতারা বলছেন, নবীন প্রবীণদের সমন্বয়েই দল গড়া হচ্ছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘আন্দোলন, সংগ্রামে যারা ভ্যানগার্ড মুখ্য ভূমিকা পালন করে, দেশের গণতন্ত্রের জন্য আমরা সবসময় যাদের নিয়ে সংগ্রাম, লড়াই করে এসেছি এরা কিন্তু বিশাল অংশ তরুণ।
তিনি বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান একদিকে নবীন আরেকদিকে প্রবীণ এই যে সবার সমন্বয় করে যে ধারাবাহিকতা নিয়ে দলকে সাজাচ্ছেন এবং দেশকে নিয়ে চিন্তা করছেন এটা আমরা উপলব্ধি করি।’
আর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন বলছেন, দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের তারুণ্যকে দলীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে মূল্যায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘যারা এ তারুণ্যকে জয় করে বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে, অসীম সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা আজ যে ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি, যাদের ত্যাগ, তিতীক্ষার মাধ্যমে পেয়েছি, আমাদের আসন্ন যে বাংলাদেশ রয়েছে সেখানে আমাদের দল তাদেরকে মূল্যায়ন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
বিএনপির ভোট ব্যাংক ভারী করতে দলের তারুণ্য আগামীর রাজনীতিতে অংশীদারিত্ব পাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে সেই অংশগ্রহণ কতটা প্রভাব রাখতে পারবে তা দৃশ্যমান হবে আগামীর রাজনীতিতে।