উখিয়া ও টেকনাফে ৩৩টি আশ্রয় শিবিরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বসবাস। ২০১৭ সালে ব্যাপক অনুপ্রবেশের পর আট বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার। উল্টো বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কয়েক মাসে রাখাইন থেকে পালিয়ে এসেছে আরও ৬০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা।
এদিকে ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা সাড়ে ১২ ডলার থেকে কমিয়ে ছয় ডলারে নিয়ে আসার ঘোষণায় উদ্বেগে রোহিঙ্গারা। তহবিল সংকটে শিশু শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়া, স্বাস্থ্যসেবা থেকে রোহিঙ্গাদের বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে আগামী শুক্রবার উখিয়ায় আশ্রয়শিবির পরিদর্শনে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তাদের এই সফরে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে অগ্রগতি আসবে মনে করছেন কমিউনিটির নেতারা।
সফরটিকে ঐতিহাসিক মনে করছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন। এর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যে বিশ্ব সম্প্রদায় পাশে আছে এবং বাংলাদেশ যে তাদের পাশে রয়েছে এই আস্থা রোহিঙ্গাদের মধ্যে তৈরি হবে।
কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, 'আমাদের দুইটি প্রত্যাশা। একটা হচ্ছে ভলেন্টিয়ারির প্র্যাক্টিশনটা যেন দ্রুতগতিতে হয় পাশাপাশি রোহিঙ্গারা ফেরত না যাওয়া পর্যন্ত রেশনের ব্যবস্থা যেন আগের জায়গায় ফেরত আসে।'
ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শরণার্থী মো. মিজানুর রহমান বলেন, 'বাংলাদেশের সরকারপ্রধান এবং জাতিসংঘের প্রধান একসঙ্গে লাখো রোহিঙ্গার সাথে ইফতারের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মনেও এই কনফিডেন্স তৈরি হবে যে তাদের পাশে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে সম্প্রদায় রয়েছে।'
পরিদর্শনের পাশাপাশি একাধিক বৈঠকে অংশ নিবেন তারা। এরপর ইফতার করবেন লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে। তাই কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জেলা পুলিশের মুখপাত্র মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'বিমানবন্দর থেকে ক্যাম্প পর্যন্ত এবং আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। সবমিলিয়ে আমাদের এক হাজার ২০০ ফোর্স থাকবে। কয়েকটি স্তরে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।'
এর আগে ২০১৮ সালের ২ জুলাই নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের দেখতে উখিয়া ক্যাম্পে আসেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।