পুলিশের উপর চড়াও, বেশ কয়েকজন আক্রমণাত্মক যুবক। একে একে কেড়ে নেয়া হয় মোবাইল, মানিব্যাগ। চলে মারধর ও গালিগালাজ। পুলিশ পরিচয় দিয়েও এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা থেকে রেহাই পাননি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানার এসআই ইউসুফ আলী।
সম্প্রতি নগরের গোল পাহাড়ে রিক্সা যাত্রী ও পথচারীদের টার্গেট করে ফুটপাতের ড্রেন ব্যবহার করে ছিনতাই , আগ্রাবাদে অভিযানে পুলিশকে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাত আতংক ছড়িয়েছে জনমনে। ।
গত বুধবার নগরের নিউমার্কেট মোড়ে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের খপ্পরে পড়েন আইনজীবী শেফায়েতুন নেছা সোমা। চোখের নিমিষেই তার গলার চেইন টান দিয়ে বাস থেকে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারী। যেখানে অংশ নেয় বাসে থাকা আরও ৭/৮ জন।
ছিনতাইয়ের শিকার আইনজীবী শেফায়েতুন নেছা সোমা বলেন, ‘আমার যে জায়গায় ছিনতাই হয়েছে সে জায়গায় সিসিটিভি নষ্ট। তার মানে ওই জায়গাতেই ছিনতাই হয় তারা জানে। থানার কর্তৃপক্ষ কি জানেনা ওখানে সিসিটিভি নষ্ট? আমি কার কাছে নিরাপত্তা চাইবো। যার কাছে নিরাপত্তা চাইবো সে নিজেই তো নিরাপদ নয়।’
এমন বাস্তবতায় ঈদ শপিং ও রোজায় বেচা বিক্রিকে ঘিরে উদ্বেগ দানা বেধেছে ব্যবসায়ী ও সাধারণের মনে। নগরে দেড় শতাধিক মার্কেটের অন্তত তিন লাখের মতো দোকানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। দিনের চাইতেও রাতে বেচাকেনা হয় বেশি। সব মিলিয়ে রোজায় কয়েক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। এবার নিরাপত্তা ভীতি কাজ করছে ব্যবসায়ীদের মনে।
চিটাগাং মেট্রোপলিটন শপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘বখাটে ছেলেদের উৎপাত যেন না হয় এটার জন্য পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের সাথে বৈঠক হয়েছে আমাদের।’
রোজায় হকার বা ফুটপাতকেন্দ্রিক ব্যবসা ঘিরে সক্রিয় থাকে অপরাধীরা। তাই ভাসমান হকারদের মার্কেটের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছেন অনেকে।
তবে নগরের আগ্রাবাদে ঈদের আগে চালু হওয়া নাইট মার্কেটের পাইলট প্রকল্প নতুন সমাধানের পথ দেখাচ্ছে। এখানে হকারদের শৃঙ্খলায় আনার পাশাপাশি নিশ্চিত করা হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাজ্জাদ উদ্দিন বলেন, ম্যানেজম্যান্টের মাধ্যমে সরকারকে তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। রাস্তার সামনে যখন হকাররা এভাবে বসে যায় তখন মার্কেটে প্রবেশের কোনো উপায় থাকে না। এ কারণে অনেক সমস্যা তৈরি হয়।’
চসিকের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে আগ্রাবাদ থেকে পাইলট প্রকল্প শুরু করা হলো। এটা যদি সাকসেসফুলি সবাই গ্রহণ করে তাহলে চট্টগ্রামের সব জায়গায় আমরা এটা ইমপ্লিমেন্ট করতে চেষ্টা করবো।’
পুলিশ বলছে, রমজানে অপরাধীদের তৎপরতা ঠেকাতে বাড়ানো হয়েছে টহল, মার্কেট কেন্দ্রিক আলাদা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত অভিযানে গত এক মাসে আটকও হয়েছে শতাধিক।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাহমুদা বেগম বলেন, ২৪ ঘণ্টা আমাদের পুলিশ নিয়োজিত আছে। আমরা ক্রাইম এবং ট্রাফিক দুই দিকেই ফোর্সকে রি-এনফোর্স করেছি। এছাড়াও যখনই প্রয়োজন হচ্ছে অন্যান্য বাহিনীরাও আমাদের সাপোর্ট দিচ্ছেন।’
ঈদ কেনাকাটায় নগরবাসীকে ভিড় ভাট্টায় সাবধানতা অবলম্বন, নিরাপদ ও আলোকিত সড়ক ব্যবহারের পরার্মশ পুলিশ কর্মকর্তার।